অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা নেওয়ার উপায়

আমাদের দাম্পত্য জীবনে মা-বোনদের মাসিক ও ঋতুস্রাব নিয়ে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন কম বেশি হতে হয়। তা শুধু বাংলাদেশ নয় উন্নত বিশ্বের অন্য জায়গাতে ও আছে মাসিক নিয়ে নানান সমস্যা। মাসিক বা ঋতুস্রাব প্রতিটি মেয়ের জীবনের একটি বিশেষ অংশ। মাসিক বা ঋতুস্রাব না থাকলে কোন মেয়েই এই জগত সংসারে মাতৃত্বের স্বাদ অনুভব করতে পারত না। আপনারা কি জানেন বর্তমানে পৃথিবীর ১৫% দম্পতি বন্ধ্যাত্ব জনিত সমস্যায় ভুগছেন? এর প্রধান কারন গুলোর মধ্যে একটি হল প্রথম থেকেই মাসিক এর অনিয়মিত হওয়ার বিষয়টি ঠিকঠাক লক্ষ্য না করা।
গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট যারা খেয়ে থাকেন তারা অনিয়মিত মাসিক জনিত সমস্যায় ভুগতে পারেন। প্রতিটি ট্যাবলেট এর সাইড ইফেক্ট থাকে। ট্যাবলেট ব্যবহার না করে কনডম ব্যবহার করা অতি উত্তম ।অনিয়মিত মাসিক কারনে গর্ভধারণে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কি কি কারনে অনিয়মিত মাসিক হয় আমরা একটু আলোচনা করব। অনিয়মিত মাসিক জনিত সমস্যায় নিয়ে অনেক মেয়ে মানুষ আছে খুব ডিপ্রেশনের মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করতেছে। পৃথিবীতে কমই আছে এই সমস্যা থাকা সত্ত্বেও সে ভালো আছে মানসিক দিক দিয়ে। একটা মেয়ে সময় মত সঠিক চিকিৎসা এবং সঠিক পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে এই রোগের বিস্তার করে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। কি কারণে মাসিক অনিয়মিত হয় এই বিষয়টি আমাদের প্রত্যেকটা মেয়েদেরকে জানা খুবই প্রয়োজন।
১. হরমোনাল প্রভাব: প্রোজেস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে অনিয়মিত মাসিক দেখা দেয়। বয়সন্ধিকালে অনিয়মিত মাসিক স্বাভাবিক কিন্তু বয়সন্ধিকাল হবার পর ও যদি আপনার অনিয়মিত মাসিক থাকে তাহলে এটি অবশ্যই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই হরমোনাল ইমব্যালেন্স সমস্যাটি দেখা দেয় আমাদের খাদ্য তালিকার কারণে। তাই খাদ্যতালিকায় অবশ্যই সুষম খাবার রাখার চেষ্টা করবেন।
২. সিস্ট: আজকাল বড় ভয়ের কারণ সিস্ট,খুবই সাধারন ব্যাপার হলেও এটির অনিয়মিত মাসিকের অন্যতম একটি প্রধান কারণ। নারীর জরায়ুতে সিস্টের কারণে বাচ্চা গর্ভে পৌছাতে পারেনা। এতে ভয়ের কিছু নেই ঠিক সময়ে যদি আপনি সঠিক চিকিৎসা নিতে পারেন তাহলে সিস্ট থেকে রেহাই পাওয়া খুবই সহজ।
৩. থাইরয়েড ডিসঅর্ডার: থাইরয়েড জনিত সমস্যার কারণে আপনার মাসিক অনিয়মিত হতে পারেন।
৪. জরায়ু টিউমার: বেশিরভাগ নারীই ৪০ বছরের পড়ে গিয়ে জরায়ুর টিউমার জনিত সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। জরায়ুর টিউমার জনিত সমস্যা এখন অল্প বয়সী মেয়েদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে যার কারণে তাদের মধ্যে অনিয়মিত মাসিকের সমস্যাটি দেখা যায়।
৫. জন্মনিরোধক ট্যাবলেট: অনেক বেশি সময় ধরে কোন নারী যদি গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন তারা অনিয়মিত মাসিক জনিত সমস্যায় ভুগতে পারেন। প্রতিটি ট্যাবলেট এর সাইড ইফেক্ট থাকে। ট্যাবলেট সেবন না করে কনডম ব্যবহার করাই ভালো।
অনিয়মিত মাসিকের ফলে শরীরে কি কি পরিবর্তন ঘটে?
অনিয়মিত মাসিক আপনার শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ এতে আপনার শরীরের ক্ষতিকর পদার্থ গুলো আপনার শরীরে থেকে যায়। আসুন জেনে নেই অনিয়মিত মাসিক এর ফলে আপনার শরীরে কি কি পরিবর্তন ঘটতে পারে। হঠাৎ করে আপনার শরীরের ওজন চরম মাত্রায় বৃদ্ধি পাবে অথবা চরম মাত্রায় কমে যাবে। মানসিক যন্ত্রণা দেখা দেবে অতিরিক্ত আবেগী হয়ে উঠবেন। অ্যানোরেক্সিয়া বা বুলিমিয়া জাতীয় সমস্যায় ভুগতে পারেন এতে আপনার অতিরিক্ত খেতে ইচ্ছা হতে পারে আবার ক্ষুধা একেবারে চলে যেতে পারেন।
অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা নেওয়ার উপায়
অনিয়মিত মাসিক হলে আপনার বাচ্চা হবে না এটা ভেবে কখনো মন খারাপ করবেন না। অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা নেওয়ার উপায় হাজারো রয়েছে এই আধুনিক যুগের আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে এর মহান আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই সেফা দান করবেন। জীবনের চলাফেরা কাজকর্ম, শারীরিক ব্যায়াম, নামাজ তারপরে খাদ্য তালিকা কিছু পরিবর্তন আনতে পারি।
অনিয়মিত মাসিক কি ভালো করার জন্য অবশ্যই আপনাকে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো হলুদ, আদা, ধনে, তিল ও দারুচিনি। এই খাবারগুলো আপনার মাসিক চক্র কে সঠিক ভাবে সঞ্চালন করতে সাহায্য করবে আর মাসিক চক্র ঠিক হয়ে গেলে বাচ্চা হওয়া নিয়ে আপনার কোন সমস্যা থাকবে না।
হরমোনের মাত্রা কমে গেলে অনিয়মিত মাসিক দেখা দেয় এবং আপনার বাচ্চা ধারনের ক্ষমতাও তেমন থাকে না। তাই হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধির জন্য সুষম খাবার খান এবং Alcohol থেকে নিজেকে দুরে রাখুন। শরীরে উচ্চ হরমোন নিঃসরণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করে এমনই কিছু খাবারের নাম উল্লেখ করা হলো।
১.ডিম:
ডিমে আছে স্যাচারেইটেড ফ্যাট, ওমেগা থ্রিএস, ভিটামিন ডি, কলেস্টেরল এবং প্রোটিন। উচ্চ হরমোন তৈরির জন্য এই উপাদানগুলো জরুরি।
২.কলা:
এই ফলের ব্রোমেলেইন এনজাইম হরমোনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। উচ্চ হরমোন বৃদ্ধি করতে এই ১০টি খাবার অতি প্রয়োজনীয় পুরুষের জন্য। বয়স ত্রিশ পেরোনোর পর পুরুষের শরীরে হরমোনের পরিমাণ কমতে শুরু করে। ফলে স্মৃতিশক্তি হ্রাসের পাশাপাশি কাম বাসনা কমে যাওয়া, লিঙ্গোত্থানে সমস্যা, খারাপ মেজাজ সহ মনোযোগের অভাব দেখা দেয়। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত কিছু খাবার খাওয়ার অভ্যাস করলেই উপকৃত হওয়া যায়।
৩.ঝিনুক:
উচ্চ হরমোন তৈরিতে ঝিনুক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঝিনুকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ খনিজ উপাদান। যা হরমোনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। অনেকেই ঝিনুক পছন্দ না, বা অনেকেই খেতে অভ্যস্ত না তাহলে বিকল্প হতে পারে চিজ বা পনির। বিশেষ করে সুইস এবং রিকোত্তা চিজ।
৪.পালংশাক:
এটা প্রমাণিত যে, হরমোনের মাত্রা কমাতে পারে এই শাক। তাছাড়া এই শাকে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই আর দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি সরবরাহের উত্স হিসেবে কাজ করে।
৫। ডালিম:
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইম্পোটেন্স রিসার্চ থেকে জানা যায় ৪৭ শতাংশ যারা প্রতিদিন ডালিমের রস খেয়ে থাকেন তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
৬। মাংস:
বিশ্বাস করা হয় যারা একেবারেই মাংস খান না তাদের শরীরে হরমোনের পরিমাণ কম থাকে। তবে অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার আগে সাবধান। যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানান ভেড়ার মাংস দিয়ে তৈরি খাবারে প্রচুর স্যাচারেইটেড ফ্যাট থাকে।
৭। রসুন:
রসুনের হরমোনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে টেস্টোস্টেরন ভালো মতো কাজ করে। ভালো ফল পেতে রসুন কাঁচা খাওয়ার অভ্যেস করুন।
৮। মধু:
মধুতে আছে প্রাকৃতিক নিরাময়কারী উপাদান বোরোন। এই খনিজ উপাদানে আছে আয়রন, এবং নাইট্রিক তা অক্সাইডের মাত্রা ঠিক রাখে।
৮। কাঠবাদাম:
নারী এবং পুরুষ উভয়ের ‘সেক্স ড্রাইভ’য়ের জন্য প্রতিদিন এক মুঠ কাঠবাদাম যথেষ্ট। এই বাদামে রয়েছে জিঙ্ক যা শরীরে শক্তি যোগায় এবং শরীর সতেজ রাখে।
১০। টক ফল:
‘স্ট্রেস হরমোন’ কমানোর পাশাপাশি টক জাতীয় ফলে রয়েছে ভিটামির এ। যা শরীরে শক্তি উত্পন্ন করতে প্রয়োজন হয়। এছাড়া ওয়েস্ট্রজেনের মাত্রা কমায়।
টেস্টটিউব বেবি
যখন কোন ভাবেই সমাধান করতে পারবেন না, অনেক উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার পর ও যদি কোন ভাবে মাসিক নিয়মিত করা না যায়, তখন বাচ্চা নেওয়ার আরেকটি মাধ্যম হচ্ছে টেস্ট টিউব বেবি। এই টেস্ট টিউব বেবি নেওয়ার জন্য এখানে দম্পতীর কাছ থেকে Eggs এবং স্পাম নিয়ে ফার্টিলাইজা করে জরাযুতে পারফেক্টলি সেট করে দেওয়া হয়। এটি সাইন্স এর অভিনব আবিষ্কার। এই চিকিৎসা পেতে আপনাকে স্থান ভেদে ৫০ হাজার থেকে থেকে ১ লাখ পযন্ত খরচ করতে হতো পারে। প্রত্যেকটা মেয়ের কাছে মাতৃত্ব অনেক মধুর একটি ক্রিয়েশন। তাই নিজের যত্ন নিন যে কোন গোপন অঙ্গ ইনফেকশন হলে ডাক্তারের কাছে যেতে দেরি করবেন না।