প্রেগনেন্সি টেস্ট করার উপায়

গর্ভধারণের প্রথম মাসে গর্ভবতী হওয়ার তেমন কোন কিছু ধরন লক্ষ্য করা বা প্রকাশ পায় না। তাই এ সময়ে লক্ষণের ভিত্তিতে গর্ভাবস্থার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া বেশ কঠিন। এই অবস্থায় আপনি গর্ভধারণ করেছেন কিনা সেটে জানা সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হল কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। এসব পরীক্ষা কে প্রেগনেন্সি টেস্ট বলা হয়ে থাকে। আপনি ডাক্তারের সাথে অথবা স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তাছাড়া আপনারা কোন রকম সাহায্য ছাড়াই প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে পারবেন। যত তাড়াতাড়ি গর্ভধারণের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবেন তত দ্রুত আপনারও গর্ভে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা গুলো মেনে চলা শুরু করতে পারবেন।
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার সঠিক সময়
মাসিকের সম্ভাব্য সময়ের মধ্যে মাসিক হুরু না হলে এবং সম্প্রতি আপনি জন্মনিরুদ্ধ পদ্ধতির ব্যবহার ছাড়া সহবাস করে থাকলে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে পারেন। মাসিক মিস হওয়ার পরেই প্রথম দিনেই আপনি প্রেগনেন্সি টেস্ট করে গর্ভবতী কিনা সেটি জেনে নিতে পারেন। প্রেগনেন্সি টেস্টে সাধারণত গর্ভবতী নারীদের প্রস্তাবে একটি হরমোনের উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়ে থাকে। গর্ভবতী নারীদের প্রস্তাবের এই হরমোনের পরিমাণ শুরুর দিকে অল্প পরিমাণে থাকে। তাই গর্ভধারণের একদম শুরুর দিকে অথবা সহবাসের পরপর এর টেস্ট করলে সাধারণত হরমোনের উপস্থিতি সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। কমপক্ষে ২১ দিন অথবা পরবর্তী মাসিকের সম্ভাব্য তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। বর্তমানে কিছু আধুনিক প্রেগনেন্সি টেস্টের মাধ্যমে পিরিয়ডের সম্ভাব্য তারিখ আসার অনেক আগেই এমনকি গর্ভধারণের নয় দিনের মধ্যেই আপনি গর্ভধারণ করেছেন কিনা সেটি নিশ্চত ভাবে জানা যায়।
কিভাবে প্রেগনেন্সি টেস্ট করবেন
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার অনেকগুলো উপায় আছে এর মধ্যে প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট বা কাঠি দিয়ে আপনি সহজেই ও কম খরচে ঘরে বসে টেস্ট করতে পারেন। সাধারণত নির্দিষ্ট সময় পিরিয়ড না হলে প্রথমে প্রেগনেন্সি কিটের সাহায্যে টেস্ট করা হলে থাকে। ফার্মেসিতে ৩০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির প্রেগনেন্সি টেস্টের কিট পাওয়া যায়। এছাড়াও ডাক্তারের কাছে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা প্রস্রাব পরীক্ষা ও আল্ট্রা সাউন্ড পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি গর্ভবতী কিনা সে বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারবেন। পাশাপাশি গর্ভের সন্তানের হৃদপিন্ডের কার্যক্রমও হয়তো সনাক্ত করা যেতে পারে।
প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট এর ফলাফল কতটা সঠিক
সাধারণভাবে সঠিক নিয়মে পরীক্ষা করলে প্রেগন্যান্সির টেস্টের কীট বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দেয় তবে প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিসের ফলাফল হিসেবে সময়ের নিচে বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরী যেমন- গর্ভধারণের 6 দিন পর থেকে শরীরের বেটা হিউম্যান কোরীয়নিক গোনাড ট্রপিন নামের বিশেষ হরমোন তৈরি হতে শুরু করে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ৮-১০ দিন সময়ও লাগতে পারে। গর্ব অবস্থায় শুরুর দিকে শরীরের এই হরমোনের পরিমাণ তুলনামূলক কম থাকে ধীরে ধীরে এই হরমোনের পরিমাণ বাড়তে থাকে। তাই অনেক ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থার একেবারে শুরুর দিকে কিট দিয়ে পরীক্ষা করলে গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে ফলাফল নেগেটিভ আসতে পারে।
অনেকে অনিয়মিত মাসিকের সংসার ভুগে থাকেন হলে তারা মাসিকের সম্ভাব্য তারিখ ঠিকমতো হিসাব করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে অনেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণ হরমোন তৈরি হওয়ার আগেই টেস্ট করে ফেলতে পারেন এমন হলে গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ আসতে পারে। এছাড়াও প্যাকেটের নির্দেশনা ঠিকমতো না মেনে পরীক্ষা করলে গর্ভবতী হলেও ভুলবশত টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ আসতে পারে। তাই ড্রেস্টের ফলাফল নেগেটিভ আসার পরও আপনার পিরিয়ড না হলে অথবা আপনার নিজেকে গর্ভবতী মনে হলে কয়েকদিন পর আবার প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে পারেন। দ্বিতীয়বার টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ আসার পরেও যদি আপনার পিরিয়ড না হয় তাহলে দ্রুত কোন গাইনে ডাক্তার অথবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা সদর হাসপাতালে যেতে পারেন। এখানে আরো কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আপনি গর্ভবতী কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারবেন।
পরিশেষে,প্রেগনেন্সি টেস্টের আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম আপনাদের আরো কোন কিছু জানার থাকলে আমাদেরকে অবশ্যই জানাবেন ধন্যবাদ সবাইকে।