স্বাস্থ্য
মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ডের সময় করণীয়, খাবার ও সতর্কতা

সাধারণত ১০ থেকে ১১ বছর বা শৈশবের শেষ পর্যায়ের পর থেকে প্রাপ্ত বয়সের পূর্ব অর্থাৎ ১৮ থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত কৈশোর কাল এর বয়সকে বয়সন্ধিও বলা হয়ে থাকে। কৈশরে শিশু থেকে প্রাপ্ত বয়সে যাওয়ার জন্য ছেলে মেয়েদের শরীরের মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। এ পরিবর্তনের সময় কাল অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত ও দ্রুত। শারীরিক বিকাশ বলতে দেহের পরিবর্তন ও আকার আকৃতির বৃদ্ধিকে বোঝায়। শারীরিক পরিবর্তনের কিছু সাধারন বৈশিষ্ট্য আছে যা সবার মধ্যে বিদ্যমান থাকে।
এ সময় বছরের উচ্চতা ৭ থেকে ১০-১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত (৩ থেকে ৫ ইঞ্চি) পর্যন্ত বাড়তে পারে। সাধারণত মেয়েরা বাড়তে থাকে ওজন বাড়লেও উচ্চতা বাড়ানোর জন্য তাদেরকে পরিবর্তন হতে হয়। শিশু থেকে ধারণ করে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটে যার মধ্যে ছেলে এবং মেয়ে আলাদা ভাবে চেনা যায়। ১১ থেকে ১২-১৩ বছর বয়সের মেয়েদের মাসিক হয়। এটা প্রত্যেক মেয়েরই প্রত্যেক মাসে হয়ে থাকে। মাসিক একটি প্রাকৃতিক নিয়ম যা প্রত্যেক নারী হয়ে থাকে। মেয়েদের প্রতি ২৮ দিন অন্তর অন্তর মাসিক হয় এটি ৩ থেকে ৫ দিন কারো কারো ক্ষেত্রে ৭ বা তার বেশি দিন ও হতে পারে। আগে থেকে জানা না থাকলে এ পরিবর্তনের ভয় পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। শারীরিক এই পরিবর্তন কারো কারো ক্ষেত্রে কৈশোর কাল শুরুর সাথে সাথে না হয়ে ২/১ বছর আগে বা ২/১ বছর পরেও শুরু হতে পারে। তবে এতে দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। হঠাৎ করে এ বয়সে যে পরিবর্তন হয় তা জীবনের স্বাভাবিক চক্র। মেয়েদের মাসিক হওয়ার পর তাদের অনেক নিয়ম কানুন মানতে হয়। অনেক ধরনের খাবার খেতে হয় আবার কিছু কিছু জিনিস মেনে চলতে হয় যেগুলো করা যাবে না, করলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে এমন কিছু বিষয় রয়েছে।
মাসিক হওয়ার সময় যা যা করা যাবে না
১। শেভ করা অথবা ওয়াক্সিং থেকে বিরত থাকা। মাসিকের সময় শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা অনেক বেশি কমে যায়। ফলে শরীরে ব্যাথার অনুভূতি অনেক বেশি হয়। শরীর অনেক বেশি অনুভূতিশীল পূর্ণ হয়ে থাকে। তাই শেভ করার সময় কেটে গেলে অনেক বেশি ব্যথা অনুভব হতে পারে। ওয়াক্সিং করলেও অনেক সময় কেটে যাওয়ার ভয় থাকে।
২। অনেক বেশি আবেগ পূর্ণ সিনেমা দেখা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ মাসিক হওয়ার সময়ে মেয়েদের মন মুড সুইং হয়ে থাকে। তাদের একেক সময় একেক রকম মানসিকতা হয়ে থাকে। একসময় অস্থিরতা কাজ করে মনের মধ্যে। আবার এক এক সময় ভালো লাগা কাজ করে মনের মধ্যে। এর মূল কারণ হচ্ছে মাসিকের সময় শরীরের হরমোনের তারতম্য দেখা দেওয়া। আর এই সময় আবেগৎপূর্ণ সিনেমা দেখা উচিত নয় এই কারণে কারণ এই সময় মন এমনিতেই অস্থিরতা হয়ে থাকে আবেগ পূর্ণ সিনেমা দেখার কারণে মনের উপর বাড়তি চাপ পড়বে।
৩। চুপচাপ বসে থাকা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারন চুপচাপ বসে থাকলে মন খারাপ থাকে মানুষের কথায় আঘাত লাগে এবং যখন চুপচাপ থাকা যায় তখন মাসিক নিয়েই ভাবনায় লগ্ন থাকে।
৪। দুগ্ধ জাত খাদ্য থেকে বিরত থাকতে হবে। যদিও মাসিকের সময় শরীর থেকে ক্যালসিয়াম ও আয়রন বেরিয়ে যায়। যার কারণে ক্যালসিয়াম ও আয়রনের ঘাটতি থাকে তবুও মাসিকের সময় দুগ্ধ জাতীয় খাবার দুধ, দই, পনির এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারন দুগ্ধজাত খাদ্যে আছে অ্যারাকোডনিক এসিড। এই এসিড তল পেটে ব্যাথা সৃষ্টি করে।
৫। স্যানিটারি ন্যাপকিন অনেক লম্বা সময় ধরে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা। অনেক মেয়েরা আছেন সময়ের অভাবে একটা স্যানিটারি ন্যাপকিন অনেক সময় ধরে অথবা সারাদিন একটাই ব্যবহার করে। এটা করা ঠিক নয় এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর পর স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলানো উচিত। অনেক লম্বা সময় ধরে ন্যাপকিন শরীরে থাকলে সেটায় ব্যাকটেরিয়া জমাতে থাকে আর এই ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করে এবং শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে।
৬। অতিরিক্ত লবণ যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। মাসিকের সময় এমন ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত যে ধরনের খাবারে অতিরিক্ত লবণ রয়েছে। যেমন: ফিস ফ্রাই, চিপস, চানাচুর, লবণাক্ত বিস্কুট ইত্যাদি। লবণে থাকে সোডিয়াম আর এই সোডিয়াম মাসিকের সময় রক্ত প্রবাহের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
৭। উপর হয়ে শুয়ে থাকা, অনেকেই আছেন পেটে খুব ব্যাথা করলে পেটে চাপ দিয়ে উপুর হয়ে শুয়ে থাকেন। এতে পেটে এমন ভাবে চাপ লাগে যাতে পেটের ক্ষতি হতে পারে এটা মোটেও ঠিক না। এই সময় এভাবে উপুরে শুয়ে থাকলে হার্টবিট তারতম্ম হয়, রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। এবং অক্সিজেন ঠিকমত সরবরাহ হয় না বলে অনেক সময় মাথা ঝিমঝিম ও মাথা ব্যাথা করে।
৮। ভারী জিনিস তোলা থেকে নারীদের সব সময় বিরত থাকতে হবে। কারণ নারীদের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যঙ্গ থাকে তাদের পেঁটে।
যেমন: জড়ায়ু বা ডিম্বাশয়। তাই মাসিক হওয়া অবস্থায় নারীদের খুব ভারি জিনিস টেনে তোলা উচিত নয়।
৯। ভারি ব্যায়াম: গবেষকের গবেষণা মতে জানা গেছে যে কিছু কিছু ব্যায়াম আছে যেগুলো মাসিকের সময় করা নিষেধ। এবং কিছু কিছু ব্যায়াম আছে যেগুলো মাসিক চলাকালীন সময় করা যায় যেটা শাস্তির পক্ষে ভালো এবং মাসিকের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। যেমন: যোগ ব্যায়াম যেগুলো মাসিকের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে।
১০। প্রস্রাব আটকে রাখা, প্রস্রাব আটকে রাখার মত বদ অভ্যাসটা অনেকেরই আছেন। কারণ মাসিকের সময় বার বার প্রস্রাব করতে টয়লেটে যাওয়া অনেকের কাছেই খুবই বিরক্ত কর একটা বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তাই অনেকেই প্রস্রাব আটকে রাখে বার বার প্রস্রাব করতে যাওয়ার ভয়ে। তবে এটা খুবই খারাপ একটা অভ্যাস যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই প্রস্রাব আটকে রাখার কারণে তল পেটে চাপ লাগে যা পেঁটের ব্যাথা বাড়াতে সহায়তা করে।
১১। অনেক জোরে চিৎকার করা বা উচ্চস্বরে কথা বলা। মাসিকের সময় রাগ জীদ এমনিতেই বেড়ে যায় তাই সেই রাগ জীদের কারণে অনেক বেশি চিৎকার করা করা যাবে না। চিৎকার করার জন্য শরীরের যে পেশির উপর জোর দিতে হয় তার মধ্যে পেঁটের পেশিও আছে।
১২। পানি কম খাওয়া মাসিকের সময় বার বার প্রস্রাব করতে বাইরে যেতে হবে বলে অনেকেই এই সময় পানি কম খান। এটা করা ঠিক নয় মাসিকের সময় অনেক বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হয়। অনেক বেশি পানি পান করার কারণে শরীরকে দুর্বল হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়।
১৩। সুগন্ধ যুক্ত ন্যাপকিন ব্যবহার না করা। কারণ সুগন্ধ যুক্ত ন্যাপকিনের অনেক ধরনের ক্ষতিকর ক্যামিকেল ব্যবহার করে থাকেন। আর এই ক্যামিকেল ব্যবহার করাতে সেই ক্যামিকেলটি শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। অনেক মেয়েরা আছেন টয়লেট করার সময় প্যাড বা ন্যাপকিন খুলে টয়লেটের পাশে মেঝেতে রেখে দেয় আবার টয়লেট করা শেষ হলে সেই ন্যাপকিনটি আবার ও ব্যবহার করে। এই কাজটি মোটেও করা ঠিক নয় কারণ ন্যাপকিনটি বাইরে কিছুক্ষণের জন্য রেখে দেওয়াতে তাতে পোঁকা মাকর ব্যাকটেরিয়া ও নানান ধরনের জীবাণু সেই ন্যাপকিনের উপর প্রবেশ করতে পারে আর তা আমাদের জরায়ুতে প্রবেশ করবে। কারণ মাসিক হওয়ার সময় জরায়ু অনেক নিচের দিকে নেমে আসে এবং জরায়ুর মুখ খুলে যায় তাই যেকোনো পোঁকা মাকড় ব্যাকটেরিয়া জরায়ুতে প্রবেশ করা খুব সহজ হয়ে দাঁড়ায়।
১৪। অনেক নারীরা মাসিকের সময় নেকরা বা কাপড় ব্যবহার করে থাকে ওই ব্যবহৃত কাপড় ঘরের মধ্যে বা স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় শুকাতে দিলে তাতে কাপড় ঠিকই শুকায় তবে তাতে জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে। তাই কাপড়টি রোদে দিয়ে ভালো করে শুকাতে হবে।
১৫। মাসিকের সময় অনেক জোরে লাফ দেওয়া ও দৌড়ানো উচিত নয়। অনেক বেশি জোরে লাফ ছাপ বা দৌড় দিলে তাতে জরায়ুতে আঘাত লাগতে পারে। তাতে শরীরের ক্ষতি হতে পারে মাসিকের সময় এটা খেয়াল রাখতে হবে যাতে শরীরে কোথাও কোন আঘাত না লাগে। কারণ এই সময় যদি হোঁচট খাওয়া, পড়ে যাওয়া বা শরীরে কোন আঘাত লাগে তা জরায়ুর উপর প্রভাব পড়ে।
পিরিয়ডের সময় যা যা করবেন
মাসিকের সময় অনেক কিছু আছে যেগুলো করা যাবে না আবার এমনও কিছু বিষয় আছে যেগুলো করা যাবে তা হলো: চিন্তামুক্ত থাকা মানে অতিরিক্ত চিন্তা না করা। অতিরিক্ত চিন্তা যেমন মানসিকতাকে আঘাত করে তেমনি মাসিকেও অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে যেমন অতিরিক্ত রক্তপাত এবং প্রচন্ড পেঁট ব্যাথা ইত্যাদি। প্রয়োজন মতো বিশ্রাম করা, রাত জেগে না থেকে রাতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো। একা একা না থেকে মানুষের সাথে মেশা এবং মন খুলে কথা বলা, গল্প করা।
অপ্রয়োজনে বসে না থেকে লোক জনের সাথে সময় দেওয়া। সব সময় শান্ত মেজাজে থাকা ও মনকে ভালো রাখা। পেঁটে ব্যাথা হলে পেটে গরম পানির সেক নিতে হবে এবং কুসুম গরম পানি পান করতে হবে।
পিরিয়ড হলে কি খাওয়া উচিত
এ সময় রক্তের ঘাটতির কারণে শরীরের পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। সময় আয়রনের মাত্রাতিরিক্ত ক্ষরণের ফলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। তাই এ সময়ে প্রত্যেকটি নারীর শরীরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। এবং শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য খাবারের বেলায় ও হতে হবে সচেতন। মাসিক কালীন সময়ে নারীদের যেসব খাবার খেলে শরীর সুস্থ সবল রাখবে এবং শরীরের সঠিক পুষ্টি দিতে সহায়তা করবে তা হলো:
১। পানি মাসিকের সময় সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার হল পানি। কারণ মাসিকের সময় রক্তের সাথে শরীর থেকে পানিও বের হয়ে যায় যার ফলে শরীরে ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি হয়। তাছাড়া মাসিকের সময় শরীরে পানি স্বল্পতা তাহলে শরীর খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। আর বমি বমি ভাব, পেট ব্যাথা, মাথা ঘোরা, মাথা ব্যাথা করা, হাটু ব্যাথা, পায়ে ব্যাথা এগুলো মাসিক চলাকালীন সময়ে পানি স্বল্পতার কারণে হয়ে থাকে তাই মাসিকের সময় দিনে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করা দরকার।
২। প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া কারণ প্রোটিন জাতীয় খাবারের সাহায্য করে মাসিক চলাকালীন সময়ে এমনিতেই নারীদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে তাই সেই সময় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া দরকার শরীরের শক্তি যোগানোর জন্য প্রোটিন জাতীয় খাবার প্রয়োজন। প্রোটিন জাতীয় খাবারের মধ্যে এগুলো খাওয়া যায় তাহলে বিভিন্ন ধরনের ডাল, সামুদ্রিক মাছ, বড় মাছ মুরগির মাংস কবুতরের মাংস, গরুর মাংস, হাঁসের মাংস খাসির মাংস ও বিভিন্ন ধরনের কলিজা, এ খাবার গুলো মাসিক চলাকালীন সময়ে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে।
২। ডিম মাসিক চলাকালীন সময়ে প্রতিদিনে খাবার তালিকায় একটি করে ডিম রাখা বাধ্যতামূলক করা উচিত। কারণ ডিম এই সময় তাৎক্ষণিক শক্তি যোগায় এবং ডিমে থাকা পুষ্টি গুণ আয়রন সহ নানা ধরনের প্রোটিন ও ভিটামিনের অভাব পূরণ করে।
৩। শাকসবজি মাসিক চলাকালীন সময়ে প্রত্যেক দিনের খাবার তালিকায় শাকসবজি রাখা জরুরী শাক-সবজির মধ্যে যেগুলো খাওয়া বিশেষ দরকার তা হলো: ফুলকপি, লাউ, লাল শাক, ডাটা শাক, কচু শাক, পালং শাক, মিষ্টি কুমড়া, সজনে বেগুন, পেঁপে, কাঁচা কলা, বরবটি, কাকরোল ইত্যাদি। এসব শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। যা মাসিকের সময় ক্ষয় হয়ে যাওয়া আয়রন, ভিটামিন ও খনিজ লবণে ঘাটতি পূরণ করে। এবং মাসিকের সময় মাথা ব্যাথা, পেঁট ব্যথা, পেশি ব্যাথা, হাঁটু ব্যাথা, কোমর ব্যাথা এগুলো কমাতে সাহায্য করে।
৪। ফলমূল: পেঁয়ারা, আমড়া, কমলা, আঙ্গুর, কাঁচা পেঁপে, আমলকি, জাম্বুরা, লেবু, জলপাই, কামরাঙ্গা, পাঁকা পেঁপে, আনারস, তরমুজ, কলা, খেঁজুর, আপেল, আনার ইত্যাদি।
এ সকল ফলগুলো শরীরের জন্য এই সময়ে খুবই উপকারী। এই খাবার গুলো মাসিক চলাকালীন সময়ে শরীরে রক্ত উৎপাদন করতে সহায়তা করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। শরীরের মধ্যে ক্ষতিকর রক্ত তরল করে শরীর থেকে বের করতে সহায়তা করে। তাছাড়া শরীরে আয়রন ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরকে সতেজ রাখে ও সুস্থ রাখে।
৫। চিনা বাদাম: ১০০ গ্রাম চিনা বাদামে ২৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। তাই মাসিক চলাকালীন সময়ে রোজ ১০০ গ্রাম সম্ভব না হলে ও ৫০ গ্রাম ৫০ গ্রাম সম্ভব না হলে ২৫ গ্রাম করে চিনা বাদাম খাওয়া দরকার।
৬। কাঠ বাদাম: ১০০ গ্রাম চিনা বাদামে ২১ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। মাসিক চলাকালীন সময়ে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ টা করে কাঠ বাদাম খাওয়া দরকার।
৭। সয়াবিন: ১০০ গ্রাম সয়াবিনে ৫০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
নিয়মিত না খেলে ও সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন সয়াবিন বড়ি রান্না করে খেলে মাসিক চলাকালীন সময়ে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হবে।
৮। ব্রকলি: নিয়মিত ব্রকলি সিদ্ধ বা রান্না করে খেলে মাসিক চলা কালীন সময়ে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হয়।
৯। কাজু বাদাম: ১০০ গ্রাম কাজু বাদামে ১৮ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। তাই এ সময় প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য মাসিক চলা কালীন সময়ে কমপক্ষে ৫ টা করে কাজু বাদাম খাওয়া দরকার।
১০। ওটস: ১০০ গ্রাম ওটস এ ১৭ গ্রাম প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন ডি কমপ্লেক্স, ম্যাংগানিস, উচ্চ মানের ডায়েটটি ফাইবার পাওয়া যায়। প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন এর চাহিদা পূরণ করে এই ওটস তাই নিয়মিত ওটস খাওয়া দরকার।
মাসিকের ব্যাথা কমাতে যা যা খাবেন
মেয়েদের পিরিয়ডে ব্যাথা হবে এটা একটা স্বাভাবিক বিষয়। পিরিয়ডে ব্যাথা নেই এমন মেয়ে খুব কমই দেখা যায়। তবে এর প্রাথমিক চিকিৎসা রয়েছে যা করলে ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নিচে পিরিয়ডের ব্যাথার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করা হলো:
- আদার রস: ব্যাথার জন্য আদার রস খুবই কার্যকরী একটা উপাদান। শুধু পিরিয়ডের ব্যাথা না পেটে যে কোন ব্যথা হলে আদার রস গরম পানির সাথে মিশিয়ে কয়েকবার খেলে ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
- অ্যালোভেরা ও মধু: অ্যালোভেরার রস বের করে তার সাথে মধু মিশিয়ে জুস তৈরি করে দিনে কয়েক বার খেলে ব্যাথা কমে যায়।
- গরম পানি: কুসুম গরম পানি পিরিয়ডের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। তাই প্রত্যেক মেয়ের উচিত পিরিয়ড সময়ে হালকা কুসুম গরম পানি পান করা। এবং হট ব্যাগে গরম পানি ভরে তা পেঁটে চেক দিলে ব্যাথা কমে যায়।
- রসুন: আদিকাল থেকে রসুনের ব্যবহার প্রচলিত হয়েছে। ব্যাথা কমাতে রসুনের তুলনা নেই। শুধু পিরিয়ডের ব্যাথা না পেঁটে ব্যাথা ,হাঁটু ব্যাথা, কোমর ব্যাথা ,হাত ব্যাথা, পা ব্যাথা, ঘাড় ব্যাথা ,পায়ের গোড়ালি ব্যাথা যে কোন ধরনের ব্যাথা কমাতে রসুনের ব্যবহার অতুলনীয়। রসুনের খোসা ছাড়িয়ে কয়েকটি রসুন সেসা দিয়ে সরিষার তেলের মধ্যে দিয়ে ভালো করে গরম করতে হবে তার পর ওই তেল ব্যাথার স্থানে আস্তে আস্তে করে ম্যাসাজ করতে হবে এতে দুই মিনিটের মধ্যে ব্যাথা সেরে যায়।