স্বাস্থ্য

মাসিক হওয়ার ট্যাবলেটের নাম

Rate this post

প্রত্যেকটা নারীর প্রত্যেক মাসেই মাসিক হয়ে থাকে। আর কোন একটা মাসে যদি মাসিক না হয় তখন সেই মেয়ের জন্য সেটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর তখন তারা ডাক্তারের চিকিৎসা নেন। আর ডাক্তারের চিকিৎসা না নিয়ে নিজের ইচ্ছা মতো কোন ওষুধ খাওয়া ঠিক না তাই যে কোন ওষুধ খাওয়ার জন্য প্রথমে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে তার পর চিকিৎসক যে ওষুধ সাজেস্ট করবেন সেটা খেতে হবে। চিকিৎসকরা অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার জন্য বিশেষ একটা ওষুধ দিয়ে থাকেন সেটা হল নরমেনস। Renata limited কম্পানির 5mg এর একটি ওষুধ। যার দাম ৫ টাকা পিস। এক পাতায় দশটা ওষুধ থাকে তার দাম ৫০ টাকা। নরমেনস এমন একটা ওষুধ যা শুধু মাসিক নিয়মিত করেনা।

যেসব মেয়েদের অনেক বেশি ব্লিডিং হয় এবং সেই ব্রিডিং টা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত থাকে ওটা কিন্তু সেই মেয়েটির জন্য খুবই চিন্তায় এবং অধৈর্যকর একটা বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। টাকার কাছে খুব বিরক্ত জনক একটা বিষয় কারণ সে চাইলে সব কিছু করতে পারবে না স্কুল কলেজ করতে পারবে না। কোন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারবেনা এবং কি সে যদি হয়ে থাকে তাহলে চাকরি করার জন্য তাকে বাইরে যেতে হবে আর ওই বাইরে যাওয়াটা তাকে আটকে দেবে অতিরিক্ত ও দীর্ঘ সময় পর্যন্ত মাসিক হওয়া। আর এই সমস্যা গুলোর সমাধান দিতে পারে ওই একটা ওষুধই সেটা হল নরমেনস। শুধুমাত্র অতিরিক্ত এবং অনিয়মিত মাসিকের জন্য নরমেনস নয়। প্রি মেন্সটুয়েল সিমটম যেমন বেস্ট এ ব্যাথা, মাথা ব্যাথা ও মুড সুইং হলে, এর উপযুক্ত ওষুধ নরমেনস। এন্ডোমেট্টসিস্ট হলে চিকিৎসকরা এর জন্য নরমেনস ওষুধ সাজেস্ট করে থাকেন।

যাদের মাসিক হচ্ছে না তারা যদি এই নরমেনস ওষুধটা এক সপ্তাহ খেয়ে থাকেন প্রতিদিন তিনটা করে তাহলে দেখা যাবে এক সপ্তাহ পর যখন ওষুধ খাওয়া বাদ দিয়ে যেদিন বাদ দেবে তার পরের দিন অথবা দুদিন পর মাসিক শুরু হয়ে যাবে। মাসিক শুরু হওয়ার পর যখন আবার মাসিক শেষ হবে তারপর যদি দেখা যায় আগের মত মাসিক হচ্ছে না তাহলে আবার নরমেন্স ওষুধ খেতে হবে আর নিয়মিত এভাবে দুই থেকে তিন মাস খেলে মাসিক নিয়মিত হবে। আবার অনেকের দেখা যায় মাসিক ঠিক মত মানে নিয়মিতই হচ্ছে কিন্তু অতিরিক্ত ব্লিডিং এবং ব্লিডিং টা দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী আছে।

এক্ষেত্রে যদি নরমেনস ওষুধটি ১ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত প্রতি দিন তিনটা করে খাওয়া যায় এবং ২১ দিন পর্যন্ত খাওয়ার পর বাদ দিতে হবে। তার পর আবার মাসিক শুরু হবে মাসিক শুরু হওয়ার ৭ দিন পর আবার নরমেন্স ওষুধ খাওয়া শুরু করতে হবে। এভাবে দুই মাস খেলে মাসিক নিয়মিত হবে এবং ব্লিডিং কম থাকবে। অনেক চিকিৎসকরা মাসিক নিয়মিত করার জন্য ওরাল পিল ও দিয়ে থাকেন। যাকে বলা হয় ৩য় জেনারেশন পিল। এই পিল হরমোনাল ইমব্যালেন্স কে রেগুলার করে। যেসব অনিয়মিত মাসিক হয় তাদের এই ওরাল পিল খাওয়ার মাধ্যমে অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করে।

মাসিক না হওয়ার কারণ

একটি মেয়ের বয়সন্ধিকালের যে সময়টা, মানে যখন তার প্রথম মাসিক হয় তখন থেকে তার অনিয়মিত ভাবে মাসিক হয়ে থাকে। কিছু কিছু মেয়ের দুই মাস পর একবার হয় আবার কতক জনের ৬ মাস পর এভাবে অনিয়মিত ভাবে মাসিক হয়ে থাকে। আবার অনেকের এক মাসে দুই বার মাসিক হচ্ছে। আর এই মাসিক অনেক দিন স্থায়ী হচ্ছে। ৮ দিন, ৯ দিন এরকম স্থায়ী হতে পারে। অনেকের প্রচন্ড ব্লিডিং হয়ে থাকে। আর এভাবে প্রায় এক বছর দুই বছর আড়াই বছর পর্যন্ত হতে পারে আবার একেক জনের প্রথম থেকে নিয়মিত হয়। প্রথম মাসিক হওয়ার পর থেকেই তাদের নিয়মিত হয়ে থাকে। তবে প্রথম মাসিক হওয়ার পর থেকে অনেক দিন অনিয়মিত হওয়ার পর যখন নিয়মিত মাসিক হবে তারপর যদি অনিয়মিত হয় তখন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর তখন তাকে অনিয়মিত মাসিক সার্কেল ধরা হয়।

একটি মেয়ের মাসিক শুরু হলো কিন্তু তারপরে যদি অনিয়মিত, মানে মাসিক হচ্ছে না তখন সেই মেয়েটি খুব চিন্তায় পড়ে যায় শুধু মেয়েটি না তাঁর পরিবারের প্রত্যেকটি মানুষ চিন্তায় পড়ে যায় কি হলো তার কোন সমস্যা হলো কিনা এই ভেবে। শুধু মাসিক বন্ধ না তার সাথে সাথে আরো অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন খাবারের অরুচি খাবার খেতে ভালো লাগছে না মাথা ঘুরাচ্ছে শরীর খুব দুর্বল। আবার কিছু কিছু মেয়ের শারীরিক স্বাস্থ্য বেড়ে যাচ্ছে। তখন তারা অনেক রকম ডিপ্রেশনে ভোগে। দিনে অনেকটা সময় মনমরা হয়ে বসে থাকে। এই সমস্যাটা তার মানসিক দিক দিয়ে মানসিক গ্রস্থ হয়ে থাকে। অনেক মেয়েদের অবাঞ্ছিত লোম দেখা দেয় এবং শরীরের গ্রোদ দিনে দিনে বেড়ে যায়। অনেক বেশি চুল পড়া র সমস্যা ও দেখা দেয়। নরমাল মাসিকের সার্কেল বলতে বোঝায়, একজন সুস্থ নারী ২১ থেকে ৩৫ দিন পর পর তার মাসিক হবে। এই ২১ থেকে ৩৫ দিনের মাঝা মাঝি সময় টাতে যে কোন দিনই মাসিক হতে পারে। সেটাকে বলা হয় নরমাল মাসিক সার্কেল। আর তখনই বলা যাবে এটা অনিয়মিত মাসিক সার্কেল যখন সেই মাসিকটা ২১ দিনের আগেই হয়ে যাবে। অথবা দেখা গেল ৩৫ দিন পর পর হচ্ছে। যেমন দেড় মাস দুই মাস পর পর হচ্ছে। তখন ওটা কে বলা যায় অনিয়মিত মাসিক। এই অনিয়মিত মাসিক হওয়ার অনেক গুলো কারণ আছে কারণ গুলো হচ্ছে: কিছু কিছু মানুষের দুই মাস পর একবার হয় আবার অনেকের দেখা যায় তিন মাস পর হচ্ছে আবার অনেকের প্রতি মাসেই হয়ে যায়।

আবার এই অনিয়মিত মাসিক হওয়ার আরেকটা কারণ হচ্ছে যখন নারী বয়স্ক হয়ে যায় মানে তার মাসিক প্রায় শেষের দিকে তখন প্রত্যেকটা নারীর অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে। অনেক অবিবাহিত মেয়েরা স্বাস্থ্যবান বেশি তাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে। অন্যদিকে খুব রোগা চিকন নারীদের ও অনেক মাসিক হয়ে থাকে। আর বিশেষ করে যারা খুব চিন্তায় থাকে মাথায় খুব চাপ, এই চাপের প্রভাব পড়ে মাসিকের উপর তখন অনিয়মিত হয়ে যায়। যেসব অবিবাহিত মেয়েদের যক্ষা ও যক্ষার মতো ক্রনিক ডিজিজ রোগ আছে তাদেরও এক অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। মাসিক না হওয়ার একটি প্রচলিত কারণ হচ্ছে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান এর সমস্যা। এই সমস্যাটা যাদের হয় তাদের দেখা যায় তিন মাস চার মাস পাঁচ মাস পর মাসিক হয়ে থাকে অনেকের দুই মাস তিন মাস পরেও হয় না তাদের ওষুধ খেয়ে তারপর মাসিক আনতে হয় এবং কি এর ফলে দেখা যায় একটানা অনেক দিন যাবত মাসিক হয়ে থাকে এবং প্রচন্ড ব্লিডিং থাকে।

মেয়েদের মাসিক না হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে থাইরয়েডের সমস্যা যাদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে তাদেরও অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে দুই মাস পর অথবা এক মাসে ২ বার হচ্ছে এরকম অনিয়মিতভাবে মাসিক হয়ে থাকে। এখনকার অধিকাংশ মেয়েরা অতিরিক্ত জাংফুড এবং ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন যাতে তেলের মাত্রা অতিরিক্ত থাকে। এই তেলের মাত্রা অতিরিক্ত থাকার কারণে মেয়েদের শরীরের স্বাস্থ্য বেড়ে যায়। আর এই স্বাস্থ্যের কারণে অনিমিত মাসিক হয়ে থাকে। গনোরিয়া রক্তশূন্যতা ও ডায়াবেটিস আছে যেসব মেয়েদের তাদের অনির্বিত মাসিক হয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের রক্তশূন্যতা রয়েছে। রক্তশূন্যতা বলতে বোঝায় রক্তের হিমোগ্লোবিন কম থাকাকে। যাদের রক্তের হিমোগ্লোবিন কম তাদের রক্তশূন্যতা আর মাসিকটা হয় রক্তের উপর নির্ভর করে।

তাই যাদের রক্তশূন্যতা তাদের মাসিক অনিয়মিত হয়ে থাকে। আর যেসব মেয়েদের ডায়াবেটিস এর সমস্যা আছে ডায়াবেটিস রয়েছে। রক্তের সাথে সুগারের পরিমাণ বেশি থাকলেই ডায়াবেটিস সে সমস্যা হয়ে থাকে। আর এই সমস্যার কারণেও মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয়ে থাকে। অনেকেই অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করছেন আর এই ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম করার কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। মাসিক অনিয়মিত হওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে অতিরিক্ত মানসিক দুশ্চিন্ত করা। অতিরিক্ত চিন্তা মাথার মধ্যে সব সময় চাপ এগুলো হতে পারে মাসিক না হওয়ার কারণ। অনেক মহিলা আছেন জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার পরেও তারা কনসিভ করে ফেলে কিন্তু তারা নিজেরাও বুঝতে পারে না যে কারণে মাসিক বন্ধ থাকে । আর তারা তাকে অনিয়মিত মাসিক বলে ভাবেন।

মাসিক হওয়ার ঘরোয়া চিকিৎসা

যেসব মেয়েদের অতিরিক্ত স্বাস্থ্যের কারনে অনিয়মিত মাসিক হয়, তাদের স্বাস্থ্য কমানো দরকার। যে খাবার খেলে স্বাস্থ্য এর উন্নতি হয় সে ধরনের খাবার পরিহার করতে হবে। অতিরিক্ত তেলের খাবার খাওয়া যাবে না। বিশেষ করে ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। তবে কয়েক দিন ব্যায়াম করার পর যদি ছেড়ে দেওয়া যায় তাহলে হয় তো স্বাস্থ্যের অবনতি হবে না। তাই স্বাস্থ্য কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে কারন শরীর চর্চা শরীরের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য কমিয়ে দেয় এবং শরীরকে ফিট রাখে। প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাক সবজি খেতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার আরেকটি খাবার হচ্ছে টক জাতীয় ফল। টক জাতীয় কিছু ফল আছে যেগুলো খেলে মাসিক নিয়মিত হতে পারে এবং কি সম্ভাবনা রয়েছে। ফলগুলোর মধ্যে যেগুলো খাবেন সেগুলো হচ্ছে, মালটা জলপাই।

প্রতিদিন দুটো করে মালটা ও তিন-চারটা করে জলপাই খেলে দু-এক মাসের মধ্যেই অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত হবে। টক জাতীয় ফলের মধ্যে আরেকটি উপাদান হলো তেতুল। তেতুল যেভাবে খেতে হবে তা হলো: এক গ্লাস পানির মধ্যে পরিমাণ মতো গুড় অথবা চিনি মিশাতে হবে এবং ওর মধ্যে একটা মিস তেতুল তেতুলের বীজ অবশ্য ছাড়িয়ে নিতে হবে সেই ছাড়ানো অংশটুকু গ্লাসের মধ্যে এক চামচ দিতে হবে। ওই তেতুল পানিতে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। তার পর ওই পানির মধ্যে এক চামচ জিরার গুঁড়ো ও পরিমাণ মতো লবণ মেশাতে হবে। এটি দিনে দুই বার পান করতে হবে। আর নিয়মিত পান করলে অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক নিয়মিত হবে। এগুলো হচ্ছে ঘরোয়া উপায় মানে প্রাথমিক চিকিৎসা। আর এই প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত হতে পারে। আর এর মাধ্যমে যদি মাসিক নিয়মিত না হয় সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

Jahidul Islam

আমি মোঃ জাহিদুল ইসলাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা বিভাগ হতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে 2018 সাল থেকে সমাজের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক,মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি অবলোকন করে- জীবনকে পরিপূর্ণ আঙ্গিকে নতুন করে সাজানোর আশাবাদী। নতুনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরস্থায়ী- তাই নবরুপ ওয়েবসাইটে নিয়মিত লেখালেখি করি।
Back to top button