দিবস

বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বক্তব্য, ভাষণ, বক্তৃতা ২০২৩

বিজয় মানেই আনন্দ, বিজয় মানেই উচ্ছ্বাস। বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা হয়ে বিজেতা পক্ষ আনন্দের বাঁধ ভেঙে ফেলবে এটাই হওয়া স্বাভাবিক। ১৬ই ডিসেম্বর বাঙ্গালীদের জীবনে সেরকমই একটি আনন্দঘন মুহূর্তে সাক্ষী। এদিন যে বাঙালিরা অর্জন করেছিল তাদের বিজয়, পেয়েছিল মুক্তির দিশা। আজকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ভাষণ, বক্তৃতা এবং আরো অনেক কিছু। আপনি যদি বিজয় দিবসের ভাষণ এবং বক্তৃতা জানতে চেয়ে আমার এখানে অনুপ্রবেশ করেন তাহলে আপনাকে আমার নিবন্ধে স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করা যায় নিবন্ধটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পাঠ করলে বিজয় দিবসের ভাষণ ও বক্তৃতা সম্পর্কে অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন। চলুন তাহলে শুরু করি।

বিজয় দিবসের ভাষণ ২০২৩

দেখতে দেখতে ৫০ বছর পেরিয়ে গেছে বিজয়ের। এবছর বাঙালিরা উদযাপন করবে বিজয় অর্জনের ৫২ তম জন্মদিন। এই বিষয়ে অর্জন করতে বাঙ্গালীদের কি পরিমাণ তাজা প্রাণ আর মা-বোনেদের ইজ্জত ও সম্ভ্রম বলে দিতে হয়েছে তা ইতিহাস ঘাটলেই পাওয়া যায়। পৃথিবীর খুব কম দেশেই এ ধরনের বিজয় লাভের ঘটনা খুঁজে পাওয়া যায়। যে বাঙালিরা মননে মগজে সহজ সরল, হৃদয় ছিল না যাদের সামান্য কুটকৌশল তারাই মাতৃভূমির ডাকে সাড়া দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে। আর হয়তোবা আপামর জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ফলশ্রুতিতেই অর্জিত হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। তাইতো বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে নতুন প্রজন্মের বাঙালিরা মেতে ওঠে নানান উৎসবে। স্মরণ করে তাদের মহান সেইসব বীর শহীদদের। আজকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব বিজয় দিবস উপলক্ষে জ্বালাময়ী এবং মনকারা ভাষণ দেয়ার কৌশল নিয়ে।

বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ভাষণ

স্বভাবতই বিজয় দিবস উপলক্ষে বাঙালিরা মেতে ওঠে বিজয়ের আনন্দ, আয়োজন করে নানান উৎসবের। এ সকল উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয় সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে দারুন একটি ভাষণ না হলে যেন জমে না। এজন্য অনেকেই বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সুন্দর সুন্দর ভাষণ দেয়ার পদ্ধতি অনুসন্ধান করে থাকেন। আজকে আপনাদের সামনে কিছু বিজয় দিবসের নমুনা ভাষণ তুলে ধরা হলো যা দেখে আপনি আপনার ব্যক্তিগত ভাষণ দেয়ার কৌশল রপ্ত করতে পারবেন এবং জনগণের মাঝে তা ব্যক্ত করতে পারবেন। চলুন তাহলে দেখে আসি বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে অনবদ্য সব ভাষণের নমুনা চিত্র-

বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বক্তব্য

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আপ্যায়িত হলে সম্মানিত অতিথিগণকে ওই অনুষ্ঠানের বিষয়ের উপর একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য উপস্থাপন করতে হয়। বাংলাদেশের বিজয় দিবস কে কেন্দ্র করে ১৬ই ডিসেম্বর উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানগুলোতে আপনারা যারা অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছেন তারা ইতিমধ্যেই বক্তব্য উপস্থাপন করার পদ্ধতি অনুসন্ধান করা শুরু করেছেন। আমরা সবাই জানি যে এটি সুন্দর ও সাবলীল বক্তব্য উপস্থাপনের পিছনে থাকে প্রচুর সাধনা আর জ্ঞান চর্চা। অর্থাৎ একটি সুন্দর বক্তব্য উপস্থাপনা করে শ্রোতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ ও বাহবা পেতে হলে জ্ঞানার্জনের বিকল্প কিছু নেই। বিজয় দিবসের বক্তব্য প্রদান করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বিজয় দিবসের ইতিহাস এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে।

একটি গোছানো ও পরিকল্পিত বক্তব্যই পারে সামনে উপবিষ্ট দর্শক-শ্রোতাদের মনোনিবেশ আকর্ষণ করতে। আপনারা যারা বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে অনবদ্য বক্তব্য উপস্থাপন করার আগ্রহ নিয়ে এখানে এসেছেন তাদেরকে স্বাগত জানাই। আপনার জন্যই আজকে দারুন কিছু বিজয় দিবসের নমুনা বক্তব্য তুলে ধরা হলো।

উপস্থিত সকল শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত প্রধান অতিথি, আসসালামু আলাইকুম। আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস, বাঙালি জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের ইতিহাসে অসামান্য কীর্তি হয়ে থাকবে চিরকাল। যুগের পর যুগ এই অনুপ্রেরণা আমাদের জীবনকে নতুন উদ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

প্রিয় সুধি,
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের ঘটনা আপনারা সবাই জানেন। সেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে বাঙালি জাতিকে শেষ করার পরিকল্পনা করেছিল। তবে বাঙালি জাতির আস্থা ও সাহসের কারণে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

বাংলাদেশের এবং এদেশের প্রতিটি মানুষের জাতীয় জীবনের অন্যতম গৌরবময় ও পবিত্রতম দিন। বিজয় দিবসের এই গৌরবময় মুহুর্তে প্রথমেই যে কথাটি মনে আসে তা হলো এদেশের বহু দেশপ্রেমিক শহীদের কথা। ১৯৭১ সালের এই দিনে ২৪ বছরের পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসনের দুর্দশা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পায় বাংলার মানুষ। সেই সময়ের বীর বাঙালিরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বুকে বুলেট মেরে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনে। তাই জাতীয় প্রগতি ও চেতনার মূলে বিজয় দিবসের তাৎপর্য অপরিসীম।

আমার ভাই,
এদেশের মানুষ একসময় ‘বিজয়’ শব্দ দিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিল আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, পারস্পরিক বৈরিতা, চরম অসহিষ্ণুতা, রাজনৈতিক ধর্মান্ধতা, সামাজিক অবক্ষয়, সন্ত্রাসের সশস্ত্র বিদ্রোহ ও সংঘাত আমাদের জাতীয় জীবনে নতুন উপসর্গ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এই সব অপশক্তি দেশে অরাজকতা, অস্থিরতা, রক্তপাত সংঘাত, নিরাপত্তাহীনতা, সন্ত্রাস। বর্তমানে এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, আমরা কি সত্যিই স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম? এটাই কি আমাদের বাঙালি জাতির ইতিহাস ও সভ্যতার মূলমন্ত্র ছিল? এভাবে কি আমরা পৃথিবীতে আমাদের

শক্তিশালী মহাবিশ্বের অস্তিত্ব তুলে ধরতে পারব?
আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি, কিন্তু এর তাৎপর্য যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে না পারায় এদেশের মানুষ এখনো স্বাধীন হয়নি। তাই দেশের সর্বোচ্চ থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সকলের কাছে আমার বিনীত আবেদন, আসুন আমরা সবাই আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি। আমরা আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে দেশকে সুন্দর ও স্বাধীন দেশ হিসেবে গড়ে তুলি।

ধন্যবাদ সবাইকে

জননীর নাভিমূল ছিন্ন করে সদ্য ভুমিষ্ঠ নবজাতক যখন উচ্চস্বরে কান্নার মাধ্যমে জানিয়ে দেয় তার আগমনের বার্তা তখনই বোঝা যায় বিজয়ের আনন্দ কতটুকু। ঠিক তেমনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর বাঙালি জাতি অর্জন করেছিল মহান বিজয়। বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া অনুষ্ঠানগুলোতে দারুন কিছু বক্তব্য এবং ভাষণ দেয়ার পদ্ধতি নিয়ে দিকনির্দেশনামূলক তথ্য উপস্থাপন করেছি। আশা করি নিবন্ধটি থেকে আপনার কাঙ্খিত বিষয়টি সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। সকলকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

Jahidul Islam

আমি মোঃ জাহিদুল ইসলাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা বিভাগ হতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে 2018 সাল থেকে সমাজের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক,মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি অবলোকন করে- জীবনকে পরিপূর্ণ আঙ্গিকে নতুন করে সাজানোর আশাবাদী। নতুনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরস্থায়ী- তাই নবরুপ ওয়েবসাইটে নিয়মিত লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button