দিবস

মা দিবসের কবিতা ২০২৩, ছোট কবিতা, সেরা কবিতা

বিশ্ব মা দিবসের কবিতা অনুসন্ধান করছেন? আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। নিবন্ধে আমরা বিশ্ব মা দিবসের কবিতা তুলে ধরবো। পৃথিবীর বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিকদের নিয়ে বিখ্যাত বিখ্যাত কবিতাগুলো আজকের এই নিবন্ধে স্থান পাবে। তাই আপনি আমাদের এই নিবন্ধ হতে বিশ্ব মা দিবসের কবিতা গুলো খুব সহজে দেখে নিতে পারবেন। আমরা বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে এই ওয়েবসাইটে বিশ্ব মা দিবসের কবিতা প্রকাশিত করেছি।

১৪ মে ২০২৩ যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় বিশ্ব মা দিবস। বিশ্বের সকল মাকে শ্রদ্ধা জানাতে এই দিবসটি পালনে সূচনা হয়েছিল। দিবসটি উপলক্ষে সকল সন্তান তার মায়ের জন্য মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করে। আপনি বিশ্ব মা দিবস সম্পর্কে কবিতা অনলাইনে অনুসন্ধান করলে আমাদের এই ওয়েবসাইট হতে সংগ্রহ করতে পারেন। আমরা এই ওয়েবসাইটে বিশ্ব মা দিবসের কবিতা গুলো সংযুক্ত করেছি।

মা দিবসের কবিতা

মা শব্দটি সবচেয়ে মধুর এবং সবচেয়ে আকর্ষণীয় একটি শব্দ। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সর্বপ্রথম যে শব্দটি উচ্চারিত করে সেটি হল মা। মা তার সন্তানের জন্য নিঃস্বার্থভাবে জীবনের সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে থাকে। মা একমাত্র ব্যক্তি যিনি কোনো রকম শর্ত ছাড়াই সন্তানের জন্য জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে সন্তানের মঙ্গল কামনা করে। তাই বিশ্ব মা দিবসে সকল মায়েদের প্রতি আমার অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ভালোবাসা। এ নিবন্ধে আমরা বিশ্ব মা দিবসের কিছু কবিতা সংযুক্ত করেছি।

মায়ের প্রতি ভালবাসা
—————————– বিদ্যুৎ

মাকে নিয়ে মা দিবসে কত কথা লিখি
সত্যি করে বল কবি,মাকে ভালবাসি?
কবি মোর পেশা,কবিতা আমার নেশা
মা’কে নিয়ে লিখে, কামায় কিছু পয়সা।

দাড়ি টুপি হুজুর বেশে ওয়াজ করি আমি
সত্যি করে বল মিয়া মায়ের কথা মানি?
হাদিস বলি মা’র পদতলে মোর জান্নাত
সত্যি জেনেও মাকে,দেয়না কাপড় ভাত।

পড়াশোনা করছি বটে করি আমি চাকুরী
অশিক্ষিত মাকে নিয়ে থাকেনা চাতুরী!
বউ এর কথার যুক্তি,বাধ্য হয়ে মেনে
জন্ম ধাত্রী মাকে রেখে আসি বৃদ্ধাশ্রমে।

বৃদ্ধাশ্রমে যেতে মা’র নাই কোন আপত্তি
মনে প্রাণে দোয়া মাঙ্গে খোকা হবি সুখী!
বাড়ি ছাড়া করতে,মায়ের প্রতি অপবাদ
বুক ভরা কষ্ট, তবু থাক ওরা নিরাপদ।

মা দিবসে পণ করি, থাকব মায়ের সাথে
সব দিবস হয় যেন, মায়ের সেবা দানে।
জীবন তুমি দিয়েছ খোদা মায়ের অস্তিত্বে
পর জন্মে থাকি যেন মা’র সাথে জান্নাতে।

 

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার মাকে খুব ভালোবাসতেন। জাতীয় কবি তার মায়ের জন্য ‘মা’নামক একটি কবিতা লিখে গেছেন। কবিতাটি সর্ব মহলে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছিল। ইনফো ভান্ডার এর সম্মানিত পাঠকদের উদ্দেশ্যে আজকে এই নিবন্ধে আমরা মা কবিতাটি সংযুক্ত করেছি।

মা

কাজী নজরুল ইসলাম

যেখানেতে দেখি যাহা
মা-এর মতন আহা
একটি কথায় এত সুধা মেশা নাই,
মায়ের মতন এত
আদর সোহাগ সে তো
আর কোনখানে কেহ পাইবে ভাই!
হেরিলে মায়ের মুখ
দূরে যায় সব দুখ,
মায়ের কোলেতে শুয়ে জুড়ায় পরান,
মায়ের শীতল কোলে
সকল যাতনা ভোলে
কত না সোহাগে মাতা বুকটি ভরান।
কত করি উৎপাত
আবদার দিন রাত,
সব স’ন হাসি মুখে, ওরে সে যে মা!
আমাদের মুখ চেয়ে
নিজে র’ন নাহি খেয়ে,
শত দোষী তবু মা তো তাজে না।
ছিনু খোকা এতটুকু,
একটুতে ছোট বুক
যখন ভাঙিয়া যেতো, মা-ই সে তখন
বুকে করে নিশিদিন
আরাম-বিরাম-হীন
দোলা দেয় শুধাতেন, ‘কি হোলো খোকন?’
আহা সে কতই রাতি
শিয়রে জ্বালায়ে বাতি
একটু আসুখ হলে জাগেন মাতা,
সব-কিছু ভুলে গিয়ে
কেবল আমায়ের নিয়ে
কত আকুলতা যেন জাগন্মাতা।
যখন জন্ম নিনু
কত আসহায় ছিনু,
কাঁদা ছাড়া নাহি জানিতাম কোন কিছু,
ওঠা বসা দূরে থাক-
মুখে নাহি ছিল বাক,
চাহনি ফিরিত শুধু আর পিছু পিছু।
তখন সে মা আমার
চুমু খেয়ে বারবার
চাপিতেন বুকে, শুধু একটি চাওয়ায়
বুঝিয়া নিতেন যত
আমার কি ব্যথা হোতো,
বল কে ওমন স্নেহে বুকটি ছাওয়ায়।
তারপর কত দুখে
আমারে ধরিয়া বুকে
করিয়া তুলেছে মাতা দেখো কত বড়,
কত না সে সুন্দর
এ দেহে এ অন্তর
সব মোর ভাই বোন হেথা যত পড়।
পাঠশালা হ’তে যবে
ঘরে ফিরি যাব সবে,
কত না আদরে কোলে তুলি’ নেবে মাতা,
খাবার ধরিয়া মুখে
শুধাবেন কত সুখে
কত আজ লেখা হোলো, পড়া কত পাতা?’
পড়া লেখা ভাল হ’লে
দেখেছ সে কত ছলে
ঘরে ঘরে মা আমার কত নাম করে।
বলে, ‘মোর খোকামনি!
হীরা-মানিকের খনি,
এমনটি নাই কারো!’ শুনে বুক ভরে।
গা’টি গরম হলে
মা সে চোখের জলে
ভেসে বলে, ‘ওরে যাদু কি হয়েছে বল’।
কত দেবতার ‘থানে’
পীরে মা মানত মানে-
মাতা ছাড়া নাই কারো চোখে এত জল।
যখন ঘুমায়ে থাকি
জাগে রে কাহার আঁখি
আমার শিয়রে, আহা কিসে হবে ঘুম।
তাই কত ছড়া গানে
ঘুম-পাড়ানীরে আনে,
বলে, ‘ঘুম! দিয়ে যা রে খুকু-চোখে চুম’।
দিবানিশি ভাবনা
কিসে ক্লেশ পাব না,
কিসে সে মানুষ হব, বড় হব কিসে;
বুক ভ’রে ওঠে মা’র
ছেলেরি গরবে তাঁর,
সব দুখ হয় মায়ের আশিসে।
আয় তবে ভাই বোন,
আয় সবে আয় শোন
গাই গান, পদধূলি শিরে লয়ে মা’র;
মা’র বড় কেহ নাই-
কেউ নাই কেউ নাই!
নত করি বল সবে ‘মা আমার! মা আমার!’

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর মায়ের প্রতি সদা সর্বদা সম্মান ভালোবাসা এবং ভক্তি প্রদর্শন করেছেন। মাকে নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উল্লেখযোগ্য কিছু কবিতা আজকের এই নিবন্ধে আলোচনা করব। আপনারা আমার এই ওয়েবসাইটে তে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মাকে নিয়ে কবিতা গুলো দেখে নিন।

অন্য মা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমার মা না হয়ে তুমি

আর কারো মা হলে

ভাবছ তোমায় চিনতেম না,

যেতেম না ঐ কোলে?

মজা আরো হত ভারি,

দুই জায়গায় থাকত বাড়ি,

আমি থাকতেম এই গাঁয়েতে,

তুমি পারের গাঁয়ে।

এইখানেতে দিনের বেলা

যা-কিছু সব হত খেলা

দিন ফুরোলেই তোমার কাছে

পেরিয়ে যেতেম নায়ে।

হঠাৎ এসে পিছন দিকে

আমি বলতেম, ‘বল্ দেখি কে?’

তুমি ভাবতে, চেনার মতো,

চিনি নে তো তবু।

তখন কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে

আমি বলতেম গলা ধরে—

‘আমায় তোমার চিনতে হবেই,

আমি তোমার অবু।’

মাতৃবৎসল

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মেঘের মধ্যে মা গো, যারা থাকে

তারা আমায় ডাকে, আমায় ডাকে।

বলে, ‘আমরা কেবল করি খেলা,

সকাল থেকে দুপুর সন্ধেবেলা।

সোনার খেলা খেলি আমরা ভোরে,

রুপোর খেলা খেলি চাঁদকে ধরে।’

আমি বলি, ‘যাব কেমন করে।’

তারা বলে, ‘এসো মাঠের শেষে।

সেইখানেতে দাঁড়াবে হাত তুলে,

আমরা তোমায় নেব মেঘের দেশে।’

আমি বলি, ‘মা যে আমার ঘরে

বসে আছে চেয়ে আমার তরে,

তারে ছেড়ে থাকব কেমন করে।’

শুনে তারা হেসে যায় মা, ভেসে।

তার চেয়ে মা আমি হব মেঘ;

তুমি যেন হবে আমার চাঁদ—

দু হাত দিয়ে ফেলব তোমায় ঢেকে,

আকাশ হবে এই আমাদের ছাদ।

লুকোচুরি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমি যদি দুষ্টুমি ক’রে

চাঁপার গাছে চাঁপা হয়ে ফুটি,

ভোরের বেলা মা গো, ডালের ’পরে

কচি পাতায় করি লুটোপুটি,

তবে তুমি আমার কাছে হারো,

তখন কি মা চিনতে আমায় পারো।

তুমি ডাকো, ‘খোকা কোথায় ওরে।’

আমি শুধু হাসি চুপটি করে।

যখন তুমি থাকবে যে কাজ নিয়ে

সবই আমি দেখব নয়ন মেলে।

স্নানটি করে চাঁপার তলা দিয়ে

আসবে তুমি পিঠেতে চুল ফেলে;

এখান দিয়ে পুজোর ঘরে যাবে,

দূরের থেকে ফুলের গন্ধ পাবে—

তখন তুমি বুঝতে পারবে না সে

তোমার খোকার গায়ের গন্ধ আসে।

সন্ধেবেলায় প্রদীপখানি জ্বেলে

যখন তুমি যাবে গোয়ালঘরে

তখন আমি ফুলের খেলা খেলে

টুপ করে মা, পড়ব ভুঁয়ে ঝরে।

আবার আমি তোমার খোকা হব,

‘গল্প বলো’ তোমায় গিয়ে কব।

তুমি বলবে, ‘দুষ্টু, ছিলি কোথা।’

আমি বলব, ‘বলব না সে কথা।’

Md Jahidul Islam

আমি মোঃ জাহিদুল ইসলাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা বিভাগ হতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে 2018 সাল থেকে সমাজের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক,মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি অবলোকন করে- জীবনকে পরিপূর্ণ আঙ্গিকে নতুন করে সাজানোর আশাবাদী। নতুনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরস্থায়ী- তাই নবরুপ ওয়েবসাইটে নিয়মিত লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button