দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা – দেখুন বিস্তারিত
প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ তোদের উপকারিতা ও অপকারিতার বিশেষ সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করে অনলাইনের সহযোগিতা নিয়ে থাকেন। এ বিষয় সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ অনেক বেশি। বাঙালিরা দুধ খেতে পছন্দ করেন এই বিষয়টি সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এছাড়াও সাধারণভাবে সকলেই জানেন দূরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন উপাদান তাই এর উপকারিতা ও অপকারিতার বিষয় সম্পর্কে বিশেষভাবে জানার প্রয়োজন বলে মনে করছি আমরা।
দুধের উপকারিতা সম্পর্কিত বিষয় সম্পর্কে সাধারণ মানুষজন স্বাভাবিকভাবেই কিছু বিষয় সম্পর্কে জানেন তবে এর অপকারিতা অর্থাৎ খারাপ দিক রয়েছে এ বিষয় সম্পর্কে জানা নেই অনেকের। তাই অবশ্যই উপকারের পাশাপাশি অপকারের বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। আর এই বিষয় সম্পর্কে জানানোর উদ্দেশ্য নিয়েই আজকের আলোচনা। আলোচনা সাপেক্ষে আপনাদেরকে দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা দুই বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে সহযোগিতা করব আমরা। সুতরাং দুধ সম্পর্কিত এই আলোচনাটি সাথে থেকে এর উপকারিতা ও অপকারিতার বিষয় সম্পর্কে জানানোর পাশাপাশি শিশুদের ক্ষেত্রে গাভীর দুধ কতটা ভালো এবং খারাপ সে বিষয়ে সম্পর্কে ধারণা প্রদান করার উদ্দেশ্য রয়েছে আমাদের সুতরাং আমাদের এই আলোচনাটির সাথে যুক্ত থাকুন।
দুধের উপকারিতা
আলোচনার শুরুতেই উপকারিতার বিষয় সম্পর্কে জানানোর উদ্দেশ্য নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। যদিও উপকারিতার বিষয় সম্পর্কে সাধারণভাবে মানুষজন জেনে থাকেন তবে অনেকের জানার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভুলভ্রান্তি রয়েছে। দুধ মানব শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজন। এটির মাধ্যমে আমাদের কি কি উপকার হয়ে থাকে অবশ্যই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে হবে তাহলে আমাদের জন্য দুধের গুরুত্বের বিষয় সম্পর্কে বুঝতে সক্ষম হব তাই প্রতিটি মানুষের দুধের উপকারিতার বিষয় সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করছি আমরা।
১. ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড়ের গঠন মজবুত করে। দুধের ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি হাড় ও দাঁতে শোষিত হয়ে এদের গড়ন দৃঢ় করে। প্রতিদিন দুধ পান করলে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়া, দাঁতে পোকা ও হলুদ ছোপ পড়া, হাড় ক্ষয়ের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
২. প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পানে অন্যান্য খাবারের চাহিদা অনেকাংশে মিটে যায়। নাস্তার সময় দুধ পান করলে অনেক সময় ধরে সেটা পেটে থাকে। ফলে ক্ষুধা কম থাকে। এছাড়া দুধ পানের ফলে দেহের অনেক ধরণের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়। তাই ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগলে এবং স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কম সময়ে ওজন কমাতে চাইলে, প্রতিদিনের ডায়েটে দুধ রাখুন।
৩. দুধে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল ফিটনেস বাড়ায় ও মানসিক চাপ দূর করতে সহায়তা করে। দুধ পানে ঘুমের উদ্রেক হয়, যার ফলে মস্তিষ্ক শিথিল থাকে ও মানসিক চাপমুক্ত হয়। সারাদিনের মানসিক চাপ দূর করে শান্তির ঘুম নিশ্চিত করতে প্রতিদিন রাতে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ পান করুন।
৪. দুধ শরীর রি-হাইড্রেট করতে সাহায্য করে। ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় ভুগলে এক গ্লাস দুধ পান করে নিন। সুস্থ বোধ করবেন।
৫. কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকলে এবং দুধজাতীয় খাবারে অ্যালার্জি না থাকলে রাতে ঘুমনোর আগে প্রতিদিন এক গ্লাস গরম দুধ পান করুন।
৬. শরীরে ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের মাত্রা ঠিক না থাকলে প্রি মেনস্ট্রুয়াল সিন্ড্রোম হতে পারে। তাই পিরিয়ডের সময় পেট ব্যথা ও অ্যাসিডিটির সমস্যা হলে খেয়ে নিন এক গ্লাস দুধ।
৭. দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা মাংশপেশির গঠনে সহায়তা করে ও মাংশপেশির আড়ষ্টতা দূর করে। নিয়মিত ব্যায়ামের ক্ষেত্রে প্রতিদিন এক থেকে দুই গ্লাস দুধ খুবই উপকারী। শিশুদের মাংশপেশির গঠন উন্নত করতেও প্রতিদিন দুধ পান করা উচিত।
৮. প্রতিদিন আমরা এমন অনেক ধরণের খাবার খাই যার ফলে অ্যাসিডিটি হয় ও বুক জ্বালাপোড়া করে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ সমাধান, প্রতিদিন দুধ পান। দুধ পাকস্থলী ঠাণ্ডা রাখে ও বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা দূর হয়।
৯. দুধে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে, যা দেহের ইমিউন সিস্টেম উন্নত করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। প্রতিদিন দুধ পানে ত্বক নরম, কোমল ও মসৃণ হয়।
১০. দুধ কোলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণে রাখে ও রক্ত পরিষ্কারের পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। সূত্র: মেডিকেল নিইজ টুডে।
প্রতিদিন গরুর দুধ খেলে কি হয়
- কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- ঘুম ভালো হয়।
- হাড় মজবুত করে।
- সারাদিনের জন্য শক্তি অর্জন হয়।
- ত্বক সুন্দর করে
ছাগলের দুধের উপকারিতা
(১) হার্ট ভালো রাখে।
(২) ছাগলের দুধের পুষ্টিগুণ মায়ের দুধের কাছাকাছি।
(৩) ছাগলের দুধে এলার্জি প্রবণতা কম।
(৪) উচ্চ ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ।
(৫) ত্বকের যত্নে ছাগলের দুধ উপকারি।
(৬) ছাগলের দুধ ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা।
(৭) ছাগলের দুধ হজম করা যায় সহজেই।
(৮) ছাগলের দুধে এলার্জি নিয়ন্ত্রণ করে।
(৯) হাড়ের গঠনকে শক্তিশালী করে।
(১০) ছাগলের দুধে কোলেস্টেরল কম।
(১১) বাড়ন্ত শিশুদের জন্য উপকারী
দুধের অপকারিতা
তোদের উপকারিতা সম্পর্কিত বিষয় সম্পর্কে মানুষের ধারণা থাকলেও অনেকের মধ্যে এমন ধারণা রয়েছে যে দুধের কোন খারাপ দিক নেই কিংবা অপকারিতা নেই। তবে এটি মানুষের ভুল ধারণা অবশ্যই দুধের অপকারিতা রয়েছে। তাই যারা দুধ কে থাকেন তাদের অবশ্যই অপকারিতার বিষয় সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। নিচে অপকারিতার বিষয় সম্পর্কে জানানো হচ্ছে।
১। যাদের কিডনিতে পাথর হয়েছে তাদের দুধের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কিডনির পাথরের একটি উপাদান হচ্ছে ক্যালসিয়াম। আর দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। তাই এ ধরনের রোগীর উচিত দুধ কম খাওয়া এবং রাতে একেবারেই দুধ না খাওয়া।
২। যাদের শরীরে ‘ল্যাক্টেজ’ (lactase) নামক এনজাইমের অভাব আছে, তাদের উচিত দুধ খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান হওয়া
৩। যাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রথম অংশের আলসার তথা ডিউডেনাল আলসার আছে বা যাদের ‘কোলেসিসটিটিস’ (cholecystitis) তথা গলব্লাডারের সমস্যা আছে তাদের উচিত দুধ খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান হওয়া। কারণ, দুধ এই দুই ধরনের রোগীর রোগ আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
৪। যাদের পেটে অপারেশান করা হয়েছে, তাদের দুধ খাওয়া ততদিন বারণ, যতদিন না তারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠছেন। অর্থাৎ ঘা শুকিয়ে গেলে, তখন দুধ খাওয়া যাবে।
৫। যাদের শরীরে আয়রন বা লোহার অভাব পূরণের জন্য নিয়মিত আয়রন ট্যাবলেট খাচ্ছেন, তাদের উচিত দুধ না খাওয়া।