বাপ্পী লাহিড়ী মৃত্যু, জন্ম তারিখ, বয়স, জীবনী, পরিবার, বিস্তারিত
আলোকেশ বাপ্পি লাহরি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। উপমহাদেশের এই বিখ্যাত সুরকার গীতিকার এবং সঙ্গীত পরিচালক একনামে গোটা উপমহাদেশে পৃথিবীর অনেক মানুষ চেনে। সংগীত জগতে এই মহান মানুষটিকে সবাই বাপ্পিদা নামে সম্বোধন করে। তার বিখ্যাত গান আই এম এ ডিসকো ড্যান্সার দিয়ে তিনি বিখ্যাত হন। সংগীতের যিনি আজীবন তপস্যা করে গেছেন বাপ্পি দা। নিজের লেখা অসংখ্য গানে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন এবং সুর করেছেন। এছাড়াও তিনি বহু চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে গান গেয়েছেন।
আজকে আমরা এই মহান ব্যক্তির সম্পর্কে এই নিবন্ধে জেনে নেব। এই মহান ব্যক্তি টি ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইন তারিখে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
বাপ্পী লাহিড়ী জন্ম
বাপ্পি লাহড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শাস্ত্রীয় সংগীতে সমৃদ্ধ এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর। তার বাবা অপরেশ লাহিড়ী ছিলেন একজন বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী। তার মা বাঁশরী লাহোরী ও ছিলেন একজন সঙ্গীতজ্ঞ ও গায়িকা যিনি শাস্ত্রীয় সংগীতের উপর বেশ দক্ষতা দেখিয়েছেন। বাঁশরী লাহোরী শ্যামা সঙ্গীত এর উপর বেশ পারদর্শী ছিলেন। এই দম্পতির সংসারের একমাত্র সন্তান ছিলেন বাপ্পি লাহড়ি। বাপ্পি লাহরি শৈশব থেকেই তবলার উপর বেশ দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। তার মায়ের আত্মীয় বিখ্যাত কন্ঠ শিল্পী কিশোর কুমার এবং স মুখার্জি ।
বাপ্পী লাহিড়ী মৃত্যু
বাপ্পি লাহরি কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী 2021 সালে কভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন থেকেই বাপ্পি লাহড়ি শরীর একদম ভালো ছিল না। বাপ্পি লাহড়ি চিকিৎসা নিয়েছিলেন মুম্বাইয়ের জুহুতে সিটি কেয়ার হাসপাতালে, অবশেষে তার শরীর ছেড়ে দেয় এবং 15 ই ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত্রি এগারোটা 45 মিনিটে তাঁর জীবনাবসান ঘটে। মৃত্যুকালে এই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী বয়স হয়েছিল 69 বছর। আমরা এই মহান শিল্পীর মৃত্যুতে গভীর শোক জ্ঞাপন করছি ।
বাপ্পী লাহিড়ীর ব্যক্তিগত জীবন
ব্যক্তিগত জীবন ছিল বাপ্পি লাহিড়ীর অত্যন্ত সুখময়। সংগীতের মানসপুত্র এই বাপ্পি লাহড়ি ছোট থেকেই বড় বড় শিল্পীদের সাথে উঠাবসা ছিল। বাপ্পী ল্যাহড়ী বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক। সংসারে তার স্ত্রী – চিত্রাণী, কন্যা – রিমা এবং পুত্র – বাপ্পা রয়েছে। তিনি অলঙ্কারের ভক্ত হিসেবে পরিচিতি। সাধারণতঃ তাকে পোশাকের সাথে স্বর্ণের অলঙ্কার এবং কালো চশমা পরিধান করতে দেখা যায়। সংগীত শিল্পী কিশোর কুমার সম্পর্কে তার মামা।
বাপ্পী লাহিড়ীর সঙ্গীত জীবন
মাত্র ১৯ বছর বয়সে বাপ্পি লাহড়ি কলকাতা থেকে মুম্বাই পাড়ি জমান। ১৯৭৩ সালে হিন্দি ভাষায় নির্মিত নানহা শিকারি ছবিতে প্রথম গান রচনা করেন। এরপর তিনি বহু ছবিতে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন। বাপ্পি লাহিড়ীর গান দর্শক সমাজে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছিল। তিনি মূলত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন রবিকান্ত নাগাইসের সুরক্ষা ছবিতে গান গেয়ে। মিঠুন চক্রবর্তী ডিসকো নাচের চলচ্চিত্রগুলোতে তিনি সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। আশির দশকের মিঠুন চক্রবর্তী এবং বাপ্পি লাহড়ি একসাথে বেশকিছু ভারতীয় চলচ্চিত্রে কাজ করেন। এছাড়াও তিনি দক্ষীণ ভারতীয় হিন্দী চলচ্চিত্রের কাজ করেছিলেন এজন্য তিনি সমগ্র ভারতে ডিস্কো কিং নামে পরিচিতি লাভ করেন।
বাপ্পি লাহরি সাধারণত ভালো ভারতীয় চলচ্চিত্রের ও ভারতীয়দের ডিস্কো সংগীত পরিবেশন করতেন। তাঁর রচিত গানগুলো মূলত কিশোর কুমার এবং আশা ভোঁসলে বেশ জনপ্রিয় করে উপস্থাপন করতেন।
বাপ্পি লাহড়ি বহু চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে গান করেছিলেন। তিনি বহু চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন এবং সেই সকল সিনেমা কে গানের দিক থেকে বহু জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। বাপ্পি লাহিড়ীর সেসকল গান কাল জয়ী হিসেবে এখনো বেশ জনপ্রিয়।