টিপস

১২ মাসে ১৩ পূজার নাম

কথায় আছে হিন্দু ধর্মালম্বীদের বারো মাসে তের পূজা। কিন্তু বাস্তবে বারো মাসে আরো অনেক ধরনের পূজা পার্বণ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বারো মাসে বিভিন্ন ধরনের পূজার তালিকা আমরা এই অনুচ্ছেদে তুলে ধরব। আমাদের এই অনুচ্ছেদ হতে হিন্দু ধর্মালম্বীদের প্রতি বছর যে উল্লেখযোগ্য পূজা-পার্বণগুলো হয়ে থাকে তার তালিকা নিচে দেওয়া হল।

হিন্দু ধর্ম অনুসারে প্রতি বছর 13 পার্বণ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ১৩ পর্ব শুধুমাত্র পূজা গুলোকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয় না এছাড়াও বিশেষ বিশেষ দিনে বিশেষ বিশেষ কিছু পার্বণ উদযাপিত হয়ে থাকে। যেই ১৩ টি উৎসবকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্ম অনুসারী গুলো ১২ মাসে ১৩ পর্ব কথাটি প্রচলন শুরু করেছে তার উল্লেখযোগ্য কার্বনগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

  1. নবর্বষ—বৈশাখের ১ তারিখ।।
  2. জামাইষষ্ঠী—জৈষ্ঠ মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে।।
  3. রর্থযাএা—আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে।।
  4. মনসা পূজা—শ্রাবণ মাসে শেষ দিনে।।
  5. জন্মষ্টমী—ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে।।
  6. বিশ্বকর্মা—ভাদ্রমাসের সংক্রান্তির দিন।।
  7. দূর্গাপূজা—আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে।।
  8. ভাই ফোঁটা—কার্তিক মাসের শুক্লাদ্বিতীয়া তিথিতে।।
  9. নবান্ন—অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পর।।
  10. পৌষ পার্বণ—পৌষ মাসের সংক্রান্তিতে।।
  11. স্বরসতী পূজা—মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে।।
  12. হোলি—ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে।।
  13. চড়ক পূজা—চৈত্রের শেষ দিনে

বাংলা নববর্ষ

বছরের প্রথম দিনটিকে উদযাপন করার জন্য হিন্দু ধর্ম অনুসারী করে বাংলা নববর্ষ বিশেষভাবে উদযাপন করে থাকে। বাংলা নববর্ষের শুধুমাত্র হিন্দু ধর্ম অনুসারীগণ উদযাপন করে না এটি একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকলে এই উৎসবটিকে বিশেষভাবে উদযাপন করে থাকে। এছাড়া হিন্দু ধর্মালম্বীগণ চৈত্র সংক্রান্তি অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ দিনটিকে বিশেষ পূজার মাধ্যমে পালন করে থাকে।

জামাই ষষ্ঠী
জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে জামাইষষ্ঠী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই উৎসবের মাধ্যমে জামাই এবং শাশুড়ির মধ্যে এক গভীর সম্পর্কের মেলবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। শাশুড়ি এই দিন জামাইকে তার বাড়িতে নিমন্ত্রণ দিয়ে আনে এবং বিভিন্ন প্রকারের খাবারের আয়োজন করে থাকে । অন্যদিকে জামাই শাশুড়ির জন্য বিভিন্ন ধরনের উপহার সময়ে শ্বশুরবাড়িতে যায়।

রথযাত্রা

হিন্দু ধর্ম অনুসারীদের মধ্যে রথযাত্রা অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুনরায় বৃন্দাবন প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে এই উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে ।

মনসা পূজা

শ্রাবণ মাসের শেষ দিনে মনসা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। জগতের সুখ এবং শান্তি কামনা করে এবং সংসারের শান্তির জন্য মনসা পূজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই-বোনেরা দেশের খবর উদযাপন করে থাকে।

জন্মাষ্টমী

শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন বা জন্মতিথি উপলক্ষে জন্মাষ্টমী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের জন্মাষ্টমী তিথিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাইবোনেরা জন্মাষ্টমী উদযাপন করে থাকে। হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব।

বিশ্বকর্মা

ভাদ্র মাসের সংক্রান্তির দিন বিশ্বকর্মা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন ধরনের শৈল্পিক কার্য সম্পাদন করার জন্য বিশ্বকর্মা ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করার নিমিত্তে বিশ্বকর্মা পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

দুর্গাপূজা

হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে প্রধান ধর্ম উৎসব দুর্গাপূজা। আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। হিন্দু ধর্মালম্বী ভাই-বোনেরা দুর্গাপূজা উপলক্ষে সবচেয়ে বেশি আনন্দে মেতে উঠে।

ভাইফোঁটা

ভাইফোঁটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধর্ম উৎসব। ভাই বোনের সম্পর্ক আরও মধুর করার জন্য ভাইফোঁটা উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়। ভাইফোঁটা উপলক্ষে প্রত্যেক ভাই তার বোনের কাছ থেকে ফোটা গ্রহণ করে এবং বোনকে বিশেষ উপহার দিয়ে খুশি করে। ভাইয়ের মঙ্গল কামনা করে এই উৎসবটি বোনেরা আয়োজন করে থাকে এবং ভাইয়ের মঙ্গলের জন্য ঈশ্বরের কাছে বিশেষ প্রার্থনা করেন। কার্তিক মাসের শুক্ল া দ্বিতীয় তিথিতে ভাইফোঁটা অনুষ্ঠিত হয়।

নবান্ন

শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মালম্বী ভাই-বোনেরা নবান্ন উৎসব পালন করে না। সকল ধর্মের মানুষ নতুন ধান কাটা উপলক্ষে নবান্ন উৎসব যথাযথ মর্যাদায় পালন করে থাকে।

পৌষ পার্বণ

পৌষ মাসের সংক্রান্তিতে পৌষ পার্বণ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই দিন প্রত্যেক হিন্দু পরিবারে বিশেষ নিষ্ঠান্ন তৈরি করে সকলে মিষ্টিমুখ করে উৎসবে মেতে ওঠে ।

সরস্বতী পূজা

হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাইবোনদের কাছে অন্যতম প্রধান ধর্ম উৎসব সরস্বতী পূজা। প্রত্যেক শিক্ষার্থী সরস্বতী পূজা যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদার মাধ্যমে নিজ বাড়িতে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উদযাপন করে থাকে। মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী খ্রিতে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

হোলি
হিন্দু ধর্মানুসারীদের অন্যতম প্রধান ধর্ম উৎসব হোলি। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমার তিথিতে হোলি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এই দিন একে অন্যকে বিভিন্ন রংয়ের রাঙিয়ে দেয়। এই উৎসবকে বসন্তের আগমনী বার্তা হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

চরক পূজা

বছরের শেষে সর্বশেষ চরক পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বছরের শেষে অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ দিনটিতে চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়াও হিন্দু ধর্মানুসারীদের আরো অনেক ধরনের পুজো প্রচলিত আছে আমি সেই সকল পূজার সম্পর্কে আপনাদের অবগত করব। কালি পূজা, দূর্গা পূজা,লক্ষ্মি পূজা,সরস্বতী পূজা,কার্তিক পূজা, গণেশ পূজা, শিব পূজা,মনসা পূজা,শিতলা পূজা, ব্রহ্মা পূজা, নারায়ণ পূজা,বিশ্বকর্মা পূজা,বাসন্তি পূজা,কৃষ্ণ পূজা,বিষ্ণু পূজা,চন্ডী পূজা ইত্যাদি আরো পূজা রয়েছে।বার মাসে বারোর অধিক পূজা হয়।সে জন্য বাংলা ব্যাস ব্যকে বারো মাসে তের পূজা বলে।

Md Jahidul Islam

আমি মোঃ জাহিদুল ইসলাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা বিভাগ হতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে 2018 সাল থেকে সমাজের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক,মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি অবলোকন করে- জীবনকে পরিপূর্ণ আঙ্গিকে নতুন করে সাজানোর আশাবাদী। নতুনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরস্থায়ী- তাই নবরুপ ওয়েবসাইটে নিয়মিত লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button