মহান বিজয় দিবস ২০২৪: শুভেচ্ছা, স্ট্যাটাস, ক্যাপশন, ছবি, পোস্টার, ব্যানার, বক্তব্য, কবিতা, উক্তি
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস ২০২৪। আমরা ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্থাৎ বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা, মেসেজ, স্ট্যাটাস, উক্তি, ক্যাপশন, কবিতা, ছন্দ, ছোট কবিতা, গল্প, ইতিহাস, পোস্টার, ব্যানার ও বক্তব্য নিয়ে এই পোস্ট টি সাজিয়েছি।মহান বিজয় দিবস বাঙালির জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। কারণ ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি। প্রত্যেক বাঙালি এই দিনটাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে। বাঙালিরা সেই সকল শহীদদের স্মরণ করে তাদের বুকের তাজা রক্তে আমরা পেয়েছি আমাদের চূড়ান্ত স্বাধীনতা।
আপনি যদি মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে উক্তি শুভেচ্ছাবার্তা এসএমএস কবিতা ছবি ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করেন তাহলে এই নিবন্ধে আপনাকে স্বাগতম। এই নিবন্ধে আমরা বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন উক্তি , শুভেচ্ছা বার্তা কবিতা ও ছবি শেয়ার করব।
বিজয় দিবস ২০২৪ কবে?
16 ডিসেম্বর 1971 সালে বাংলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানি দের হাত থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। 1971 সালের 16 ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানিরা এদেশের মানুষের কাছে আত্মসমর্পণ করে। সেই থেকে 16 ডিসেম্বর বিজয় দিবস ঘোষণা করা হয়।
মহান বিজয় দিবসের ইতিহাস
16 ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। প্রতিবছর বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত শ্রদ্ধা ভরে দিনটি উদযাপন করে থাকে। কিন্তু দিনটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ইতিহাস। সেই ইতিহাস সম্পর্কে আমরা এক নজরে দেখে নেব।
1947 সালে ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশ ছেড়ে চলে গেলে তারা উপমহাদেশকে মূলত দুইটি দেশে বিভক্ত করে দিয়ে যায়। একটি হলো হিন্দুস্থান বর্তমান ভারত ও পাকিস্তান। পাকিস্তান নামে দুটি আলাদা প্রদেশ নিয়ে গঠিত হয়। একটি পূর্ব পাকিস্তান অন্যটি পশ্চিম পাকিস্তান। পূর্ব পাকিস্তান বলতে বর্তমান বাংলাদেশ এবং পশ্চিম পাকিস্তান বলতে বর্তমান পাকিস্তান কে বোঝায়। পাকিস্তান একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হলেও কার্যত পূর্ব পাকিস্তান একটি পরাধীন রাষ্ট্র হয়ে থেকে যায়। আর এই রাষ্ট্রের শাসন তন্ত্র চলে যায় পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে। এখান থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা বিভিন্নভাবে পূর্ব পাকিস্তানি দের উপর অত্যাচার নিপীড়ন চালাতে থাকে। এর সর্বপ্রথম আঘাত আসে আসে ভাষা এবং সংস্কৃতির উপর। শুরুতেই 1952 সালে ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ছাত্র, শ্রমিক, মজুর। সেই সংগ্রাম এরপর ক্রমান্বয়ে আরো অনেকগুলো ঘটনাবহুল ঘটনা ঘটে যায় 1970 সাল পর্যন্ত। অবশেষে 1970 সালে বাংলাদেশের বাঙ্গালীদের ধৈর্যের সীমা ভেঙ্গে যায়। তৎকালীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে 1970 সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।
সেই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও পশ্চিম পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে উল্টো দেশের পরিস্থিতি যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। অবশেষে 1971 সালের 7 ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক’ রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেন। মূলত সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার জন্য অস্ত্র ছাড়ার আহ্বান দেন। এর কিছুদিন পর 25 শে মার্চ রাতে ঢাকায় নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙ্গালীদের উপর গণহত্যা চালায় পশ্চিম পাকিস্তানিরা। ওই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বঙ্গবন্ধুর অভাবে পরেরদিন 26 শে মার্চ সকালে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই দিনে বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলে দীর্ঘ নয় মাস। পরবর্তীতে ভারতের মিত্রবাহিনীর ও বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর যৌথ অপারেশনের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়ে। অবশেষে 16 ই ডিসেম্বর 1971 সালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে তারা আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিনই বাঙালিরা পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। সেদিন থেকে 16 ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
মহান বিজয় দিবসের বক্তব্য
মহান বিজয় দিবস উদযাপনের জন্য বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজয় দিবস নিয়ে বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্র, শিক্ষক সহ বিভিন্ন কর্মকর্তাবৃন্দ। অনেককেই মহান বিজয় দিবসের বক্তব্য ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করেন। তাই নিবন্ধের এই অংশে আমি মহান বিজয় দিবসের কিছু বক্তব্য তুলে ধরলাম। এই বক্তব্য গুলো আপনি আপনার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থাপন করতে পারবেন।
- আজ ১৬ই ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ভূমিষ্ট হয়। বাংলাদেশের এই বিজয় ছিনিয়ে আনতে দীর্ঘ নয় মাস পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রক্তাক্ত যুদ্ধ করেছে এ দেশের দামাল ছেলেরা। এ যুদ্ধ ছিলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের জন্য যুদ্ধ, পরাধীনতার বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ, মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের জন্য যুদ্ধ। মাতৃভুমির কপালে বিজয়ের লাল টিপ পড়াতে লাখো শহীদ তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে, হাজারো মা বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি লাখ লাখ বীর শহীদের যারা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে আমাদের জন্য এনে দিয়েছে স্বাধীনতা। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে যে স্বাধীনতা, আমরা পেয়েছি যে বিজয়… সেই বিজয় অর্জনের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো এদেশেরই কিছু মানুষরূপী নরপশু। বিজয়ের ৪৫ বছর পরও সেই নরপশুদের বিচার হয়নি। লাখো শহীদের রক্তে আর মা বোনদের সম্ভ্রমের বিনিময়ে কেনা আমাদের মাতৃভুমি বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীরা আজও বসবাস করে। এ লজ্জা আমাদের, এ অপমান আমাদের মায়ের মতো দেশের। আসুন আজ আমরা শপথ নেই, মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে কেনা লাল-সবুজের বাংলাদেশে কোন যুদ্ধাপরাধীর জায়গা হবে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই।
মহান বিজয় দিবসের স্ট্যাটাস
মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আমরা বাঙালিরা নিজের ফেসবুক ওয়ালে বিভিন্ন রকম স্ট্যাটাস দিয়ে থাকি। এই স্ট্যাটাসগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো একে অপরকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানানো। আপনি যদি মহান বিজয় দিবসের স্ট্যাটাস অনলাইন অনুসন্ধান করেন তাহলে এই নিবন্ধ থেকে কিছু স্ট্যাটাস সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
- খুলে দাও সব জানালা, আমি গাইবো, গাইবো বিজয়ের গান। তারা আসবে নীরবে যারা এই দেশকে ভালোবেসে জীবন দিয়েছে। সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
- আজ ১৬ ডিসেম্বর। মোহন বিজয় দিবোশ। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও ৩০ লাখ আত্মত্যাগের পর ১৯৭১ সালের এই দিনে আমরা পেয়েছি আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ। শুভ বিজয় দিবোশ।
- লালে ভালোবাসা, সাদায় বন্ধুত্ব, নীলে বেদনা, কালো কালো আর সবুজে আমার বাংলাদেশ। সবাইকে বিজয় দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
- বিজয় আমাকে পথ দেখিয়েছে, বাঁচার আশা দিয়েছে। আমি গাই বিজয়ের গান; আমি স্বাধীনতা চাই। বিজয়ের পতাকা ধরে রাস্তা পার হতে চাই। শুভ বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
- স্বপ্ন তোমার মধ্যে শুরু, তোমার মধ্যেই শেষ। তবু তুমি ভালোবাসো হে আমার বাংলাদেশ। শুভ বিজয় দিবস বাংলাদেশ।
- হে আমার প্রিয় মাতৃভূমি, তুমি আমার জন্মস্থান; তুমি সেই জায়গা যেখানে আমি শেষ নিঃশ্বাস নিতে চাই। আমার রক্তে তুমি আছো এবং থাকবে। সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
মহান বিজয় দিবসের ব্যানার
মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন রকম রেলি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। রেলি এবং আলোচনা সভার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে একটি ব্যানার তৈরি করা। নিচে আমি মহান বিজয় দিবসের কিছু ব্যানারের ছবি সংযুক্ত করেছি।
মহান বিজয় দিবসের কবিতা
আগে বলেছি মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কবিতা প্রতিযোগিতা সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের বিখ্যাত বিখ্যাত লেখক কোন মহান বিজয় দিবস নিয়ে বিখ্যাত বিখ্যাত কিছু কবিতা লিখেছেন। সেই সকল কবিতার সমাহার পাবেন নিবন্ধের এই অংশে।
- লাল সবুজের স্মৃতি ঘেরা নিশান আমার উড়ে।
কিনেছিলাম রক্ত দিয়ে বিজয় ডিসেম্বরে।
মাগো তোমার চোখের জলে,
জয় বাংলা ধ্বনি তুলে,
হাজার ছেলে প্রাণ দিল ঐ নতুন আশার ভোরে।
রক্ত দিয়ে কেনা এই বিজয় ডিসেম্বরে। - মাগো তুমি হায়েনা ভয়ে কাঁদছ দেখে তাই।
তোমার ছেলে ঘর ছেড়েছে তোমায় দিতে ঠাই
বিশ্বমাঝে উচ্চাসনে,
পাক বাহিনীর নির্যাতনে,
আর হবেনা শোষণ, এবার তোমার আপন ঘরে।
রক্ত দিয়ে কেনা এই বিজয় ডিসেম্বরে। - মাহমুদ লতিফ
আহ্বানএসো খোকা এসো খুকু
ঘুমিয়ে থেকো না আর
তাকিয়ে দেখ সম্মুখে তোমার
মুক্ত আলোর দুয়ার।চলো খোকারা চলো খুকুরা
হও প্রাণ উচ্ছল
জাতি হিসেবে স্বাধীন তোমরা
রেখো দৃঢ় মনোবল।
মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা বার্তা
মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আমরা প্রিয়জনকে বিভিন্ন রকম শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে এ দিবসটি উদযাপন করি। তাই আপনি যদি মহান বিজয় দিবসের প্রীতি ও শুভেচ্ছা বার্তা পেতে চান না তাদের এই অংশটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
- ১৬ ডিসেম্বর তুমি এই বাঙালি জাতির অহংকার। তুমি লাখো বিজয়ের স্বাক্ষর, তুমি স্বাধীনতার স্বাক্ষর। 16 ডিসেম্বর শুভ বিজয় দিবস।
- মোহন বিজয় দিবসের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে। বিজয় মানেই স্বাধীনতা, বিজয় মানেই সুন্দর মাতৃভূমি বাংলাদেশ। শুভ বিজয় দিবস।
- যাদের আত্মত্যাগে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি তাদের আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
মহান বিজয় দিবসের ছবি ২০২৪
বিজয় দিবস উদযাপন জন্য আমারা বন্ধের এই অংশে কিছু ইউনিক ছবি সংযুক্ত করেছে। আশা করি এই ছবিগুলো আপনার পছন্দ হবে। কারণ এই ছবিগুলো আমরা অত্যন্ত ইউনিট ভাবে তৈরি করেছে আর অন্য কোন সাইটে পাবেন না।
বিজয় দিবসে উক্তি
সাফল্যের জন্য তোমাকে ৩টি মূল্য দিতে হবে: ভালোবাসা, কঠোর পরিশ্রম, আর স্বপ্নকে বাস্তব হতে দেখার জন্য ব্যর্থতার পরও কাজ করে যাওয়া।”
– ফ্র্যাঙ্ক লয়েড (আমেরিকান লেখক ও শিল্পী)
০২. “যার মাঝে সীমাহীন উৎসাহ, বুদ্ধি ও একটানা কাজ করার গুণ থাকে, তবে তার সফল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি”
– ডেল কার্নেগী (বিশ্বখ্যাত লেখক ও মোটিভেটর)
০৩. “তুমি যদি তোমার সময়ের মূল্য না দাও, তবে অন্যরাও দেবে না। নিজের সময় ও প্রতিভাকে বাজে বিষয়ে নষ্ট করা বন্ধ করো। তাহলেই সফল হবে।”
– কিম গ্রাস্ট (বিশ্বখ্যাত মার্কেটিং এক্সপার্ট)