টিপস

কেউ মারা গেলে কিভাবে সান্ত্বনা দিতে হয়

কখনো কি খুব হতাশাগস্ত কোন ব্যক্তির সামনে দিয়ে এসেছেন নিশ্চয়ই এসেছেন এই দুঃখময় জগতে হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তির সংখ্যাত অনেক। মাঝেমধ্যেই আমাদের আশেপাশের অনেক ব্যক্তিকে চরম হতাশাগ্রস্থ সময় পার করতে হয়। আমাদের কোন বন্ধু হয়তো পরীক্ষায় কাঙ্খিত যে সিজিপিএ অর্জন করতে পারেনি কোন সহকর্ম হতে প্রেমিকা বা স্ত্রীর সাথে বাধানোবাদ হয়েছে হঠাৎ করে মৃত স্বামীর কথা ভেবে খুব মন খারাপ হয়ে গেছে। এরকম পরিস্থিতিতে যদি আমরা তাদের কাছাকাছি থাকে কিংবা অন্য কোন ভাবে তাদের সাথে যোগাযোগ ঘটে তখন প্রচন্ড বিরম্বনায় পড়তে হয়।

তারা তাদের দুঃখের কথা আমাদের সাথে ভাগ করে নেয় এবং আশা করে আমরা হয়তো তাদেরকে যথাযথ সান্তনা দিতে পারব তাদের মন হালকা হতে পারে। হতাশা গ্রস্থ মানুষকে সান্তনা দেয়া এমন একটি শিল্প যেটির উপর আমাদের অধিকাংশ টাই ভালো দখল নেই আমরা হয়তো বুঝেই বুঝে ঠিক হয় যে মানুষটা কষ্ট পাচ্ছে তার পাশে আমাদের থাকা উচিত তাদের তাকে মানসিক সমর্থন জমানো উচিত কিন্তু ঠিক কিভাবে আমরা বুঝে উঠতে পারি না। ফলে তাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে আমরা এমন কিছু বলে বসি যাতে তার মন শান্ত হওয়ার পরিবর্তে আরো উল্টোটা হয়ে থাকে। এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে আমরা একজন হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে সান্তনা দিতে পারি তার সকল দুঃখ কষ্ট দূর করতে নাই বা পারলাম কিভাবে অন্তত তাকে কিছুটা হলেও ভালো বোধ করতে পারি। আমরা এই পোস্টটিতে সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি তাহলে আপনি আমাদের এই পোস্টটি ভালোভাবে লক্ষ্য করবেন।

সঠিক প্রক্রিয়া দেখানো

একজন হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তি যখন আমাদেরকে বিশ্বাস করে তার মনের সব কথা খুলে বলে তখন কিন্তু আমাদের দায়িত্ব বহুগুনে বেড়ে গেল। ওই ব্যক্তির যখন নিজের তরফ থেকে সব বলা শেষ হয়ে যাবে তখন সে অপেক্ষা করতে থাকতে থাকবে থাকবে আমাদের কি প্রক্রিয়া তা জানার। সুতরাং এর ক্ষেত্রে বিচক্ষণ হতে হবে অনেক সময় এমন হতে পারে যে ব্যক্তির সমস্যাটা আমাদের কাছে তেমন বেশি গুরু তোরে মনে না হলেও এটি খুবই স্বাভাবিক কেননা সকলের বিবেচনা বোধ তো আর সমান হয়ে থাকে না। তবে মনে রাখতে হবে যে আমাদের কাছে যাই মনে হোক না কেন ওই ব্যক্তি কিন্তু এই সমস্যাটা নিয়ে পিরিত হয়ে আছে। তাই কোনভাবেই এমন কোন প্রক্রিয়া দেখানো যাবে না যাতে মনে হয় আরো এটা কোন সমস্যা হলো নাকি বরং জল দিয়ে বলতে হবে তাকে হ্যাঁ সমস্যাটা আসলে গুরুতর এবং কষ্ট পাওয়ার মত কিছুই নাই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

সহানুভূতিশীল হওয়া

হতাশা গুরুত্ব ব্যক্তির মানসিক অবস্থা যদি আমরা উপলব্ধি করতে না পারি তাহলে সকল চেষ্টাই আমাদের মাঠে মারা যাবে এবং সকল চেষ্টাই আমাদের বৃথা হয়ে যাবে। তার জায়গা নিজেকে কল্পনা করে ভাবা আমার সাথে এমন কিছু হলে আমি কেমন বোধ করতাম। যখন আমরা দ্বিতীয় পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি ছেড়ে ঐ ব্যক্তির জায়গায় নিজেকে কল্পনা করে নতুন করে সমস্যাটা নিয়ে ভাবতে পারবো তখনই স্বাভাবিকভাবেই আমাদের কাছে বিষয়টি গুরুত্ব বেড়ে যাবে শুরুতেই যেটিকে হয়তো আমাদের কাছে নিতান্তই হাস্যকর মনে হয়েছিল সেটি কি এখন বৃহত্তর কোন সমস্যা বলে মনে হবে।

এই ব্যাপারটির নামই হলো সহানুভূতিশীল এবং এই সহানুভূতিশীল কেবল নিজের ভেতর চেপে রাখলে হবে না বরং ওই ব্যক্তির সামনে তো দেখাতেও হবে। তাকে বলতে হবে আমি বুঝতে পারছি তুমি কতটা কষ্ট পাচ্ছ তোমার মনের জোরে তারিফ করতেই হয় তোমার জায়গায় আমি থাকলে কিছুতেই এত কষ্ট সহ্য করতে পারতাম না। মনে রাখবেন আমাদের এই কথা তার সমস্যা মিটে যাবে না ঠিকই কিন্তু নিজের উপর কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস্যে ফিরে পাবে। এই মুহূর্তে আত্মবিশ্বাস যে তার খুবই প্রয়োজন ছিল।

ভরসা দেওয়া

যখন আমরা হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে ভরসা দেওয়া শুরু করব সব ঠিক হয়ে যাবার আশ্বাস দেব কিন্তু এই পর্যায়ে এসেই অনেকেই ভুলটা করে বসে। তারা কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব দেখিয়ে বলে আরে এটা নিয়ে চিন্তা করার কোন দরকার নেই সব ঠিক হয়ে যাবে অনেকে তো আরো একধাপ এগিয়ে গিয়ে বিভিন্ন অসম্ভব সমাধান বাধলে দিতে শুরু করে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে হতাশা গুরুত্ব মানুষের মনে জেঁকে বসা দুঃখ-কষ্ট এত ফলকা না যে আমাদের দুই একটা কথাতেই তা দূর হয়ে যাবে। তাছাড়া আমরা হুট করে যেসব সমাধান বলে দিচ্ছি ওই ব্যক্তির নিজের কি সেগুলো নিয়ে আগে ভেবে দেখেনি অবশ্যই দেখেছে এবং তার কাছে সেগুলোকে ভরসাযোগ্য মনে হয় নি। তাই নতুন করে সেগুলো তাকে বলে তার মানসিক অবস্থার বিন্দুমাত্র উন্নতি হবে না।

আমাদের করণীয় হলো খুবই বুঝেশুনে পা ফেলতে হবে এভাবে বলার সমস্যাটা তো যথেষ্ট জটিল চাইলে সমাধান সম্ভব নয় কিন্তু তাই বলে সমাধান যে অসম্ভব এমনটা নয়। কি সমাধান বের করা যায় তা নিয়ে আমরা ভাবতে থাকি। এরপর আমাদেরকে বাস্তবি সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান গুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে এবং শেষ পর্যন্ত যেটিকে সবচেয়ে জোরালো বলে মনে হবে সেটি তার সামনে উপস্থাপন করতে হবে।। এক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরী যে হুট করে বের করা সমাধান হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তির উপর যতটা প্রভাব ফেলবে ভেবেচিন্তে বের করা সমাধান সে তুলনা অনেক বেশি প্রভাব ফেলবে।

পরিশেষে, আমাদের এই পোষ্টটি আপনাদেরকে ভালো লাগলে অবশ্যই আপনারা শেয়ার করতে ভুলবেন না।

Jahidul Islam

আমি মোঃ জাহিদুল ইসলাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা বিভাগ হতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে 2018 সাল থেকে সমাজের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক,মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি অবলোকন করে- জীবনকে পরিপূর্ণ আঙ্গিকে নতুন করে সাজানোর আশাবাদী। নতুনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরস্থায়ী- তাই নবরুপ ওয়েবসাইটে নিয়মিত লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button