শেষ বেলার কবিতা সংগ্রহ ২০২৪
শেষ বেলার কবিতা সংগ্রহ এই পোস্ট আপনাকে স্বাগতম। আজকের এই নিবন্ধে আমরা শেষবেলার রোমান্টিক মুহূর্তের কিছু বিখ্যাত কবিদের কবিতা সংযুক্ত করব। আপনি যদি শেষবেলার প্রমাণ মুহূর্তের কিছু কবিতা পড়তে চান তাহলে এই নিবন্ধটি আপনার জন্য। ভালোবাসার মানুষকে কাছে পেয়ে গোধূলি বেলা মানুষটিকে রোমান্টিক কিছু অনুভূতি দেওয়ার জন্য সবচেয়ে ভাল মাধ্যম হচ্ছে কবিতা আবৃতি করে শোনা। ধরুন এখন আপনি গোধূলি লগ্নে প্রেমিকার সাথে বসে আছেন। আপনার মন বর্তমান রোমান্টিকতায় ভরপুর। আপনার মন চাচ্ছে প্রিয় মানুষটিকে একটি কবিতা শোনানোর। কিন্তু এই মুহূর্তে আপনার হাতের কাছে কোন কবিতার বই নেই । কিন্তু বর্তমান সময়ের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস যেটি মানুষ সময়ের সাথে থাকে সেটি হল স্মার্টফোন। স্মার্টফোন আপনার সাথে আছে তার পৃথিবীর সকল বই আপনার সাথে আছে। এই ফোনের গুগল এ আপনি অনুসন্ধান করছেন শেষবেলার কিছু রোমান্টিক কবিতা লিখে তাই আমাদের এই বন্ধের যদি আপনি এসে থাকেন তাহলে এখান থেকে আপনি মজার মজার কিছু রোমান্টিক কবিতা পেতে পারেন। রোমান্টিক কবিতা পড়ার জন্য আপনি আমার এই পোস্টটি অনুসরণ করতে পারেন।
শেষবেলার রোমান্টিক কবিতা
রোমান্টিক কথাটি মনে আসলেই সর্বপ্রথম যার কথা মনে আসে তিনি হলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিচের কবিতায় পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর রোমান্টিক দৃশ্য পট তুলে ধরেছেন। রোমান্টিকতার কথা মনে আসলেই রবীন্দ্রনাথকে ব্যতিরেকে ভাবাই যায় না। রবীন্দ্রনাথ ইস রবীন্দ্রনাথ, কি পারসেপশন, কনসেপশন, রিয়েলাইজেশন তাই আপনার প্রিয় মানুষটিকে খুশি করার জন্য নিচে কিছু রবীন্দ্রনাথের রোমান্টিক কবিতার যুক্ত করলাম।
অচির বসন্ত হায় এল, গেল চলে
অচির বসন্ত হায় এল, গেল চলে–
এবার কিছু কি, কবি করেছ সঞ্চয়।
ভরেছ কি কল্পনার কনক-অঞ্চলে
চঞ্চলপবনক্লিষ্ট শ্যাম কিশলয়,
ক্লান্ত করবীর গুচ্ছ। তপ্ত রৌদ্র হতে
নিয়েছ কি গলাইয়া যৌবনের সুরা–
ঢেলেছ কি উচ্ছলিত তব ছন্দঃস্রোতে,
রেখেছ কি করি তারে অনন্তমধুরা।
এ বসন্তে প্রিয়া তব পূর্ণিমানিশীথে
নবমল্লিকার মালা জড়াইয়া কেশে
তোমার আকাঙক্ষাদীপ্ত অতৃপ্ত আঁখিতে
যে দৃষ্টি হানিয়াছিল একটি নিমেষে
সে কি রাখ নাই গেঁথে অক্ষয় সংগীতে।
সে কি গেছে পুষ্পচ্যুত সৌরভের দেশে।
অত চুপি চুপি কেন কথা কও
অত চুপি চুপি কেন কথা কও
ওগো মরণ, হে মোর মরণ।
অতি ধীরে এসে কেন চেয়ে রও,
ওগো একি প্রণয়েরি ধরন।
যবে সন্ধ্যাবেলায় ফুলদল
পড়ে ক্লান্ত বৃন্তে নমিয়া,
যবে ফিরে আসে গোঠে গাভীদল
সারা দিনমান মাঠে ভ্রমিয়া,
তুমি পাশে আসি বস অচপল
ওগো অতি মৃদুগতি-চরণ।
আমি বুঝি না যে কী যে কথা কও
ওগো মরণ, হে মোর মরণ।
হায় এমনি করে কি, ওগো চোর,
ওগো মরণ, হে মোর মরণ,
চোখে বিছাইয়া দিবে ঘুমঘোর
করি হৃদিতলে অবতরণ।
তুমি এমনি কি ধীরে দিবে দোল
মোর অবশ বক্ষশোণিতে।
কানে বাজাবে ঘুমের কলরোল
তব কিঙ্কিণি-রণরণিতে?
শেষে পসারিয়া তব হিম-কোল
মোরে স্বপনে করিবে হরণ?
আমি বুঝি না যে কেন আস-যাও
ওগো মরণ, হে মোর মরণ।
অনন্ত প্রেম
তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি শত রূপে শতবার
জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।
চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয় গাঁথিয়াছে গীতহার–
কত রূপ ধরে পরেছ গলায়, নিয়েছ সে উপহার
জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।
যত শুনি সেই অতীত কাহিনী, প্রাচীন প্রেমের ব্যথা,
অতি পুরাতন বিরহমিলন কথা,
অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে দেখা দেয় অবশেষে
কালের তিমিররজনী ভেদিয়া তোমারি মুরতি এসে
চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।
আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি যুগলপ্রেমের স্রোতে
অনাদি কালের হৃদয়-উৎস হতে।
আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা কোটি প্রেমিকের মাঝে
বিরহবিধুর নয়নসলিলে, মিলনমধুর লাজে–
পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে।
আজি সেই চির-দিবসের প্রেম অবসান লভিয়াছে,
রাশি রাশি হয়ে তোমার পায়ের কাছে।
নিখিলের সুখ, নিখিলের দুখ, নিখিল প্রাণের প্রীতি,
একটি প্রেমের মাঝারে মিশেছে সকল প্রেমের স্মৃতি–
সকল কালের সকল কবির গীতি।
অমন আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে
অমন আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে
চলবে না।
এবার হৃদয় মাঝে লুকিয়ে বোসো,
কেউ জানবে না, কেউ বলবে না।
বিশ্বে তোমার লুকোচুরি,
দেশ বিদেশে কতই ঘুরি –
এবার বলো আমার মনের কোণে
দেবে ধরা, ছলবে না।
আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে
চলবে না।
জানি আমার কঠিন হৃদয় চরণ রাখার যোগ্য সে নয় –
সখা, তোমার হাওয়া লাগলে হিয়ায়
তবু কি প্রাণ গলবে না।
না হয় আমার নাই সাধনা, ঝরলে তোমার কৃপার কণা
তখন নিমেষে কি ফুটবে না ফুল
চকিতে ফল ফলবে না।
আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে
চলবে না।
কুণাল বিশ্বাস
অন্তর্জলী
করুণাধারায় এসো
তোমার পরশখানি লেগে আছে ঝর্ণায় পাথরে
ব্রততী সোপান, ঝরোকা, হ্লাদিনী সেতু
পার করে আমার পর্ণকুটির
অবসরে খাদ্য ও পানীয়, রাষ্ট্র
এমনকি যৌন-নিশ্চেতনা বিষয়ক
আলোচনা হয়, স্বাদুজলে নেচে ওঠে
খলসে মাছের ঝাঁক
দূর ওই তটভূমি — তমালসুরভি
শ্মশানযাত্রীর ঘুম…
এই সব কিছু থেকে
আরও দূর কোনো ক্রান্তীয় সন্ধ্যায়
শুনি তালবাদ্য… বৈজু চাঁড়ালের গান
তুমি, একে ভগবত জ্ঞান করো
বাঁক
সুখচাঁদ, ভুলে যাও বৃথা অভিমান, রাগ
একদা তোমার বন্ধুদের প্রতি
মনে রেখো তারাও কখনো পড়েছিল বাশোর কবিতা
অশ্রু, ছাপাখানা, হোটেলের লেবুডাল শেষে
হাইকুর স্তব বলেছিল জনে জনে ডেকে
মাসকাবারির ছক কষে দিয়েছিল
নির্জলা দুপুরে, কুণ্ঠিত মেসের বারান্দায়
দ্যাখো, শিউলি তলায় কুসুম কুড়িয়ে ঘরে
ফিরে যাচ্ছে পুতুলের মাসি
কুলপুরুতের মতো শীর্ণ হাওয়া দিচ্ছে আজ
সকাল থেকেই
বলো সুখচাঁদ, কেন এত অনুযোগ
তোমার প্রাণের ‘পরে কী-এমন গূঢ় সন্ধি
লিখে দিয়ে গেছে ওই ঝাঁঝালো রাত্রির আলো
যে তুমি বেশ্যাগমন ভুলে আজ ক্যারম খেলেছ
হারমোনিয়াম
তোমাকে ভাবার দিন শেষ হয়ে এল
রেলইয়ার্ডের পাশে বালি ও খেজুর,
স্বপ্নাতুর মেঘ, সহসা বিকেল…
সূর্যাস্তের আগে কোমল নি ধরেছে হরির বোন…
পলাশবাড়ি
রাত্রির সীমিত আয়োজন
ভীত চাঁদ হেঁটে যায়
একা একা
মুখচোরা বালিকার প্রায়
ছিপছিপে জোনাকির বন
পাতা ঝরে খালি
কাঁপে বিজনে বাবুইয়ের বাসা
বাতাসের দীর্ঘসূত্রিতায়
শাওন
আজ রাতে ভুলে যাই তার
অপরূপ দুটি চোখ
হে দূরত্বময়ী, দ্যাখো
বাতাস এসেছে কাছে
আমার সামান্য ঘুম চলে গেছে
একা হিমঘরে
গ্রন্থিত আমার লেখা তুমি
নিজে হাতে খুন করো
কেড়ে নাও স্বীয় অক্ষর, প্রতিমা—
যেন কুপিত ঈশ্বর
শুল্কারোপ করে যান পৃথিবীর ‘পরে
এভাবেই কখনো আকাশনীল, রক্তে রাঙা
শালবন পার করে
তোমাকে পড়েছে মনে
ভ্যান্ডার বগির মতো স্বতন্ত্র দিনের শেষে