দিবস

বিজয় দিবসের ইসলামিক স্ট্যাটাস ২০২৪ [Victory Day Islamic Status]

বাংলাদেশের বিজয় দিবসে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষ উদযাপনে অংশগ্রহণ করে থাকে। জাতীয় বিজয়ে বাঙ্গালীদের মনে কোন রকম ভেদাভেদ স্থান করে নিতে পারে না। সকল পরিচয়ের উপরে একটি পরিচয় তখন প্রধান হিসেবে ধরা দেয়- তা হলো আমরা বাঙালি। বাঙালি জীবনে বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য অপরিসীম। বিজয় দিবস উপলক্ষে আজকে থাকছে বিজয় দিবসের ইসলামিক স্ট্যাটাস নিয়ে বিশেষ আয়োজন। বাংলাদেশের অন্যান্য ধর্মের সাথে তাল মিলিয়ে ইসলাম ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠী কিভাবে বিজয় দিবস উদযাপন করতে পারবেন এবং কিভাবে ইসলামিক উপায়ে বিজয় দিবসের স্ট্যাটাস লিখতে পারবেন এ নিয়ে বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করা হবে। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে বিজয় দিবসের ইসলামিক স্ট্যাটাস সম্পর্কে বিভিন্ন খুঁটিনাটি তথ্য জেনে আসা যাক।

ইসলামের চোখে বিজয় দিবস

মাতৃভূমির প্রতি একজন নাগরিকের কতটুকু ভালোবাসা থাকা প্রয়োজন এবং কি পরিমান দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা প্রয়োজন তা নির্ধারণ করে দিয়েছে ইসলাম। প্রয়োজনে জন্মভূমির জন্য জীবন পর্যন্ত দিতে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে ইসলামে। মাতৃভূমি যখন অন্য কোন শত্রু দ্বারা আক্রমণের শিকার হবে ঠিক তখন জাতি ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সকল ভেদাভেদ ভুলে একযোগে মাতৃভূমির সম্মান রক্ষা করতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এটাই ইসলামের শিক্ষা। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান যখন পশ্চিম পাকিস্তানিদের দ্বারা শোষিত ও নিপীড়িত হচ্ছিল পদে পদে ঠিক তখন পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার জন্য প্রয়োজন ছিল আপামর জনসাধারণের পারস্পরিক সহযোগিতা। আর সেটাই করে দেখাতে সক্ষম হয়েছে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সকল স্তরের জনগণ। হয়তোবা এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পেয়েছিলাম একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। জন্ম নিয়েছিল বাংলাদেশ নামক দেশ।

১. এই দিনে আল্লাহর পবিত্রতা ও বড়ত্ব বর্ণনা করা।

২. আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা।

৩. জিহাদ বা যুদ্ধ চলাকালীন যদি ভুলত্রুটি হয়ে থাকে, সেজন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে কায়মনোবাক্যে ক্ষমা চাওয়া।

বিজয় দিবসের ইসলামিক স্ট্যাটাস

জন্মভূমির প্রতি একজন নাগরিকের কতটুকু দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকা প্রয়োজন তার ধারণা পাওয়া যায় ইসলামে। ত্যাগ ও তিতিক্ষার বিনিময়ে পাওয়া জন্মভূমির স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্যেও জীবন দিতে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে ইসলাম ধর্মে। বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা লাভ করল ঠিক তখনই বাঙ্গালীদের বাঁধভাঙ্গা উল্লাস ছিল অপরিমেয়। প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশের অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি মুসলিমরাও মেতে ওঠেন বিজয়ের আনন্দে। তবে বিজয় উদযাপনে ইসলামে রয়েছে কিছু ধরা বাধা নিয়ম। নাচ গান করে বিজয় উৎসব উদযাপন করা সমর্থন করে না ইসলাম। তবে সুশীল সংস্কৃতিতে ইসলাম কখনোই বাধা প্রদান করে না। বিজয় দিবসের কবিতা আবৃত্তি, বক্তৃতা, ছন্দ, রচনা প্রতিযোগিতা ইত্যাদি বিষয় ইসলামে কোনো রকম বাধাধরা নিয়ম নেই। আর এ কারণেই ইসলাম এতটা সুন্দর। আজকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব ইসলামের দিক নির্দেশনা মেনে বিজয় উদযাপনের বিভিন্ন উপায় নিয়ে। আপনাদের সামনে শেয়ার করব বিজয় দিবস এর ইসলামিক স্ট্যাটাস। আশা করি আপনি উপকৃত হতে পারবেন।

আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনÑ হ্যাঁ, আমি আজ তোমাদের সবার জন্য হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালামের মতো সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলাম। যাও তোমাদের থেকে কোনো প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে না। [সুনানে বাইহাকি ৯/১১৮]

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘(হে নবী) আপনি বলুন, হে রাজাধিরাজ (মহান আল্লাহ), আপনি যাকে ইচ্ছা তাকে সাম্রাজ্য দান করেন, আবার যার কাছ থেকে ইচ্ছা তা কেড়েও নেন, যাকে ইচ্ছা আপনি সম্মানিত করেন, আবার যাকে ইচ্ছা অপমানিত করেন; সবরকমের কল্যাণ তো আপনার হাতেই নিবদ্ধ; নিশ্চয়ই আপনি সবকিছুর ওপর একক ক্ষমতাবান।’ {সূরাহ আলে ইমরান, আয়াত ২৬]

বিজয় দিবসের ইসলামিক উক্তি

ইসলাম ধর্ম পালন করলে বিজয় দিবস উদযাপন করা যাবে না এমন কোন নিয়ম নেই। তবে অবশ্যই উদযাপনের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম বেঁধে দেয়া হয়েছে। নাচ গান করার প্রতি রয়েছে ইসলামের বাধ্যবাধকতা। আপনি যদি ইসলামের নিয়ম অনুসারে বিজয় দিবস উদযাপন করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই কিছু কিছু বিষয় পরিহার করে চলতে হবে। আপনি চাইলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার পরিচিতজনদের সাথে বিজয় দিবসের দারুন কিছু উক্তি শেয়ার করতে পারেন। আপনার কাজটি সহজ করার জন্যই আজকের নিবন্ধে আপনাদের সামনে দারুন কিছু বিজয় দিবসের ইসলামিক উক্তি তুলে ধরা হলো।

হিজরতের সময় প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বার বার অশ্রুসিক্ত নয়নে জন্মভূমির দিকে ফিরে ফিরে তাকিয়েছিলেন আর বলেছিলেন-

‘হে প্রিয় মাতৃভূমি মক্কা! আমি তোমাকে ভালবাসি। তোমার অধিবাসীরা যদি আমাকে
অত্রাচার-নির্যাতন করে বিতাড়িত না করত; আমি তোমাকে কখনো ছেড়ে যেতাম না।’
তাঁর এ বুকফাঁটা আর্তনাদের অবসান হয়েছিল ১০ হিজরির মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে।

মক্কা বিজয়ের আনন্দে প্রথমেই তিনি ৮ রাকাআত নামাজ আদায় করেছিলেন।
আর তিনি এত অধিক পরিমাণে আনন্দ লাভ করেছিলেন যা ভাষায় ব্যক্ত করার মতো নয়।

শেষ কথা: এসেছে ১৬ ডিসেম্বর। বাঙালি মেতেছে উৎসবের আমেজে। এই উৎসবে মুসলিমরাও কোনোভাবেই পিছিয়ে নেই। বিজয় দিবসের উদযাপনে ১৬ কলা পূর্ণ করার জন্য বিজয় দিবসের ইসলামিক স্ট্যাটাস এবং উক্তি নিয়ে আজকের নিবন্ধ সাজানো হয়েছে। নিবন্ধটি আপনার উপকারে আসলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। সকলকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি।

Jahidul Islam

আমি মোঃ জাহিদুল ইসলাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা বিভাগ হতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে 2018 সাল থেকে সমাজের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক,মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি অবলোকন করে- জীবনকে পরিপূর্ণ আঙ্গিকে নতুন করে সাজানোর আশাবাদী। নতুনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরস্থায়ী- তাই নবরুপ ওয়েবসাইটে নিয়মিত লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button