করোনা ভাইরাস অমিক্রন ভেরিয়েন্ট এর লক্ষন সমূহ
2019 সালে করোনাভাইরাস আবিষ্কৃত হওয়ার পর এটি পুরো পৃথিবী জুড়ে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে। এর প্রাণহানির সংখ্যা বর্তমানে প্রায় 60 লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। করোনাভাইরাস দিনদিন ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ হলো এটি প্রতিনিয়ত এর ভেরিয়েন্ট পরিবর্তন করছে। সর্বশেষ করোনাভাইরাস এর নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন। তাই আজকের আলোচনার বিষয় করোনাভাইরাস ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট এর লক্ষণ এবং তার কার্যকারিতা।
করোনাভাইরাস প্রতিনিয়ত এর মিউটেশন পরিবর্তন করে অন্য রূপে রূপান্তরিত হচ্ছে। এখানে উল্লেখ্য যে করোনাভাইরাস মিউটেশন এর পরিবর্তে নতুন নতুন সিরিয়াল গুলো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো আগের ভেরিয়েন্ট চাই বেশি ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাই মানুষের তথা বিজ্ঞানীদের কপালে ভাঁজ পড়েছে। আপনিও হয়তো ভাবছেন যে করোনাভাইরাস এর নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন কতটা ভয়াবহ এবং এর লক্ষণ কি। এই বিষয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করতে যাচ্ছি।
ওমিক্রন সম্পর্কে আমরা এপর্যন্ত কী জানি?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাব্লিউএইচও নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের নাম দিয়েছে ওমিক্রন। গ্রিক বর্ণমালার আলফা, ডেল্টার মতোই নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের কোড-নেম ঠিক করা হয়েছে।
এই ভ্যারিয়েন্টটি মিউটেট বা তার রূপ পরিবর্তন করেছে অনেকভাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার সেন্টার ফর এপিডেমিক রেসপন্স অ্যান্ড ইনোভেশনের পরিচালক অধ্যাপক টুলিও ডি অলিভিয়েরা বলছেন, এই ভ্যারিয়েন্টটি “অনেক অস্বাভাবিকভাবে মিউটেট” করেছে এবং এখন পর্যন্ত অন্য যেসব ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে তার চেয়ে এটি “অনেকখানিই আলাদা।”
“এটা আমাদের খুব অবাক করেছে,” বলছেন তিনি, “বিবর্তনের জন্য এটা বড় বড় ধাপ পার হয়েছে। (কোভিড জীবাণুতে) আমরা সাধারণত যে ধরণের মিউটেশন দেখি এর মধ্যে সেটা অনেক বেশি।”
করোনাভাইরাস এর মিউটেশন কেন ঘটে?
বেঁচে থাকে এবং বংশ বৃদ্ধির জন্য সব ভাইরাসে দেহের পরিবর্তন ঘটে। বেশিরভাগ সময় এর পরিবর্তন খুব সুক্ষ। কোন কোন সময় এতে ভাইরাসের ক্ষতি হয় এবং এর কার্যক্ষমতা কমে আসে। কিন্তু করোনাভাইরাস এর সময় দেখা যাচ্ছে এর উল্টো দিক। অর্থাৎ করোনাভাইরাস এর প্রতিটি ভেরিয়েন্ট আগের থেকে বেশি সংক্রামক এবং বিপদজনক।
নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন কি বেশি বিপজ্জনক?
যারা এসব ভেরিয়েন্ট সংক্রমিত হয়েছে তাদের বেশির ভাগের অসুস্থতার মাত্রা অনেক বেশি কোন প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু সোজা কথায় করোনাভাইরাসের নতুন অমিত ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন বেশী বিপদজনক এটাকে বলে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিজ্ঞানীগণ এ ও সতর্ক করে দিয়েছে করোনাভাইরাসের এই ভেরিয়েন্ট মোকাবেলায় এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন গুলোর কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেবে। এক গবেষণায় এখন পর্যন্ত যদি প্রমাণিত হয়নি কিন্তু তথাপি বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন নতুন ভেরিয়েন্ট মৃত্যুঝুঁকি 30 জনেরও বেশি। এর জন্য বিজ্ঞানীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রতি জোর দিতে বলেছে।
বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে আমরা কী জানি?
সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের হাজার হাজার ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে।
কিন্তু ইউকে, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিল ভ্যারিয়েন্টকে ”উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট” বলে মনে করা হয়।
ইউকে বা কেন্ট ভ্যারিয়েন্ট (যার আরেক নাম B.1.1.7) প্রথম দেখা গেছে ব্রিটেনে। পরে ৫০টিরও বেশি দেশে এই ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। এবং এটি এখনও মিউটেট করছে।
ব্রাজিল ভ্যারিয়েন্ট (P.1) ছড়িয়ে পড়েছে ১০টিরও বেশি দেশে। এর মধ্যে ব্রিটেনও রয়েছে।
এছাড়াও ২৮শে এপ্রিল পর্যন্ত ব্রিটেনে ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্ট (B.1.617 )-এর ২০০টি কেস ধরা পড়েছে।
তবে ভারতে কোভিড-১৯ মহামারির বর্তমান ঢেউয়ের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই বলেই বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
এই ভেরিয়েন্ট এ তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে আফ্রিকার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন।
ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট এর লক্ষ ও উপসর্গ
দক্ষিণ আফ্রিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (সামা) প্রধান Dr. Angelique Coetzee বলেছেন যে গত ১০ দিনে ৩০ জন রোগীকে করোনা ভাইরাসের নতুন রূপ ওমিক্রন দ্বারা সংক্রমিত হতে দেখেছেন।
- ওমিক্রন দ্বারা সংক্রামিত রোগীর চরম ক্লান্তি, গলা ব্যথা, পেশী ব্যথা ।
- এবং শুকনো কাশির মতো সমস্যা রয়েছে।
- শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
- করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকে এর লক্ষণগুলো বেশ আলাদা।