অনলাইনে সার্টিফিকেট নাম, জন্মতারিখ, বাবা মায়ের নাম সংশোধন করার নিয়ম
সার্টিফিকেটের ভুল তথ্য সংশোধনের নিয়মাবলী এই নিবন্ধের আলোচ্য বিষয়। আপনি যদি সার্টিফিকেটের ভুল তথ্য সংশোধন অফলাইন, অনলাইনের মাধ্যমে তথ্য সংশোধন করতে চান তাহলে এই নিবন্ধটি আপনার জন্য। আমাদের মধ্যে অনেকেই সার্টিফিকেট ভুল তথ্য নিয়ে বিপাকে পড়ে যাই। ভুল তথ্য বলতে নিজের নামের ভুল হতে পারে, পিতা মাতার নাম ভুল হতে পারে, এই সকল তথ্য সংশোধন করার জন্য অনেক সময় আমাদের স্যারের কাছে তথা নিজের বোর্ড বরাবর যোগাযোগ করার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু বর্তমান সময়ে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে খুব সহজেই ঘরে বসে সার্টিফিকেটের ভুল তথ্য সংশোধন করা যেতে পারে। তাই আপনি যদি সার্টিফিকেট সংশোধন করার অনলাইনে অনুসন্ধান করে থাকেন তাহলে এই নিবন্ধে আপনি সকল তথ্য পেয়ে যাবেন। কিভাবে অনলাইনে অফলাইনে এর মাধ্যমে সার্টিফিকেটের নিজের নাম পিতা মাতার নাম সংশোধন করা যায়।
কিভাবে সার্টিফিকেট সংশোধন করবেন ?
সার্টিফিকেটের ভুল তথ্য আপনি দুইভাবে সংশোধন করতে পারবেন। প্রথমত অনলাইন পদ্ধতি ও অবরোহী পদ্ধতি। অফলাইন পদ্ধতিতে হাতে লিখে সার্টিফিকেটের ভুল তথ্য সংশোধন করার জন্য আবেদন করার প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রে হাতের লেখায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় আবারও ভুল তথ্য আসার সম্ভাবনা থেকে যায়। এই সমস্যার সমাধানের জন্য আপনি অনলাইন পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন। অনলাইন পদ্ধতিতে খুব সহজেই সার্টিফিকেটের ভুল তথ্য সংশোধন করা যায় এবং পরবর্তীতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে।
সার্টিফিকেট সংশোধন করতে কতদিন সময় লাগে ?
অনলাইনে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে কত সময় লাগে এ সম্পর্কে প্রায়শই মানুষ অনলাইনে অনুসন্ধান করে? আমি এই নিবন্ধে অনলাইনে সার্টিফিকেট সংশোধনের করতে কত সময় লাগে এবং কত টাকা খরচ হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। সাধারণত অনলাইনে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে তিন থেকে চার মাসের মত সময় লাগতে পারে। কিন্তু যদি করোনাকালীন বা অন্য কোনো সমস্যার কারণে এই সময়ে কমবেশি হতে পারে।
সার্টিফিকেট সংশোধনের ধাপসমূহ
সার্টিফিকেটের ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য আপনাকে 2 টি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। এই ধাপগুলোর মধ্যে প্রথমত হলো লটারি পাবলিক এবং পত্রিকায় বিজ্ঞাপন।
লোটারি পাবলিক
আইনজীবীর মাধ্যমে নাম্বার জন্মতারিখের ভুল সংশোধনের জন্য প্রথমে নোটারি বা এফিডেভিট করতে হবে। প্রার্থীর নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রার্থীর বয়স যদি 18 বেশি হয় তাহলে সে নিজেই এফিডেভিট করতে পারবে। আর যদি 18 বয়সের কম হয় তাহলে তার বাবা-মা নাম সংশোধন করতে চান এই মর্মে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা নোটারি পাবলিকের কাছ থেকে এফিডেভিট করে নিতে হবে।
পত্রিকায় বিজ্ঞাপন
একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। এটা করতে হবে হলফনামা সম্পাদনের পর। বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীর সার্টিফিকেটের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, শাখা, পরীক্ষার সাল, পরীক্ষা কেন্দ্রের নাম ,রোল নম্বর, বোর্ডের নাম এবং জন্মতারিখ উল্লেখ করে যাওয়া সংশোধন করতে চান, যেমন: প্রার্থীর নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, বা জন্মতারিখ তা সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হবে। এই দুটি কাজ সম্পাদনের পর প্রার্থীর বাবা মায়ের নাম সংশোধন করতে হলে তাদের সার্টিফিকেট বা নেশনাল আইডি কার্ড আপনার নিজের হলে জন্ম সনদ দিয়ে সরাসরি চলে যান স্কুল বা কলেজে যেখানে আপনি পড়াশোনা করেছেন। এই কাজটি বাসায় বসে করা সম্ভব নয়, কারণ এটি কলেজের ইআইআইএন ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয়।
অনলাইনে সার্টিফিকেটের নাম সংশধনের খরচ:
* পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ৫০০ টাকা (কম বেশি লাগতে পারে)
* নোটারি পাবলিক ৫০০ টাকা (কম বেশি লাগতে পারে)
* আবেদেন ফি ৫৫৮×২= ১১১৬ টাকা (এসএসসি ও এইচএসসি) বিভিন্ন বোর্ডের ফি অবশ্য বিভিন্ন রকমের। যেমন ঢাকা বোর্ডের ৫৫৮, দিনাজপুর বোর্ডের ১০৩৮, রাজশাহীর ১০২৮। বোর্ডগুলো তাদের ফি নির্ধারণ করে থাকে।
সার্টিফিকেট উত্তলন ফি ৫৫৮×২= ১১১৬ টাকা (২টি)
সব মিলিয়ে আপনার খরচ হতে পারে সাড়ে ৩ হাজার টাকার মতো।
সার্টিফিকেট সংশোধন করার নিয়ম
এই কাগজগুলো প্রস্তুত করে আপনার প্রতিষ্ঠান প্রধান কে জমা দিন। উনি আপনার প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কম্পিউটার অপারেটরকে অনলাইন আবেদন করার জন্য নির্দেশ দেবেন। তখন তিনি ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আবেদন করে দেবেন এবং ফোনে মেসেজ চলে আসবে। তারপর সোনালী ব্যাংকে আবেদন ফি জমা দেওয়ার জন্য একটি রশিদ পাবেন। সেখানে 558 টাকা জমা দিতে হবে। টাকা জমা দেওয়ার রশিদ অবশ্যই যত্ন করে রাখতে হবে আবেদন ফি জমা না দিলে আবেদন গৃহীত হবে না। আবেদন ফি জমা প্রদান করলে আপনার নামে আলাদা একটি প্রোফাইল তৈরি হবে। সেখানে লগইন করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সর্বশেষ অবস্থা আপনি জানতে পারবেন।
টাকা জমা দেওয়ার ফরম আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে আরও তিন মাস সময় লাগতে। যখন কাজ শেষ হবে তখন আপনার ফোনে ম্যাসেজ চলে আসবে। ম্যাসেজ আসার পর আপনার প্রাপ্ত পাসওয়ার্ড ও ইউজার নেম দিয়ে আপনার প্রোফাইলে লগইন করলে উত্তর নামে একটি অপশন পাবেন। সেখান থেকে আপনি ডকুমেন্ট উত্তোলন অপশনে ক্লিক করলেই ডকুমেন্ট উত্তোলন বাবদ আপনার কাছে আবারও 558 টাকা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পে করতে হবে। আপনার সোনালী ব্যাংকে টাকা পেয়ে করার জন্য ফরম টি আপনার প্রোফাইল থেকে ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে হবে। এরপর সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে 7 দিনের মতো অপেক্ষা করতে হবে। সাত দিন অপেক্ষা করার পর আপনার ফোনে চূড়ান্ত মেসেজ আসবে। এর পর প্রথমবারের মতো আপনার নিজ বোর্ডে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আগে সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। আগে সার্টিফিকেট জমা দিলেই পরেরদিন আপনি নতুন সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন।