আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস
আজ জাতীয় শোক দিবস, ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্ট বাঙালি জাতীয় জীবনে অত্যন্ত দুঃখের দিন। এই দিনটিতে আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সব পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কয়েকজন বিপদগামী সৈনিক। এই অনুচ্ছেদে আমরা ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস নিয়ে কিছু কথা আপনাদের মাঝে আলোচনা করব। আপনারা আমার এই অনুচ্ছেদ থেকে ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস সম্পর্কে জানতে পারবেন।
১৫ ই আগস্ট অন্য সকল দিনের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘুমাতে যান নিজের কক্ষে।আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুরু থেকেই তার বাড়িতে বেশি সিকিউরিটি ব্যবস্থা করে রাখেননি। মানব দরদী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিচে ঘুমিয়ে থাকবেন বাহিরে তার প্রহরীরা নির্ঘুম রাত কাটাবে এই অমানবিক বিষয়টি পছন্দ করতেন না। অপরদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতো। তিনি কখনোই ভাবতে পারেননি কোন বাঙালি তার প্রাণ এভাবে কেড়ে নিতে পারে।
তখন মধ্যরাত, হঠাৎ কয়েকটা সেনাবাহিনীর গাড়ি এসে থামলো তার বাড়ির সামনে। কোন কিছুই বুঝার আগে তার বাড়ির দারোয়ান এবং গেট ম্যানকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করল। এরপর ঘাতকরা এগিয়ে গেল সদর দরজার দিকে। তাদের অস্ত্রের সামনে সবকিছুই তুলোর মতো উড়ে গেল। একে একে হত্যা করলেন প্রিয় পুত্র শেখ রাসেলকে, শেখ জামাল সহ তার পরিবারের প্রায় সদস্য সকল সদস্যকে।
ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।পৃথিবীর এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নীপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবি ও সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন।
ততক্ষণে বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি সেনাবাহিনীর হেডকোয়ার্টার কে ফোন করলেন অবিরত কিন্তু সেখানে কেউ তার ফোন তুলল না। অবশেষে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করলো ঘাতকরা। যেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য রক্তের রঞ্জিত হয়ে গেল। বাংলার বুকে নেমে আসলেও ঘন অন্ধকার। এভাবেই বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করে ঘাতকরা এখন বিদেশের মাটিতে মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ঐদিন আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানা দেশের বাহিরে থাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। কে জানতো যদি সেদিন তারাও দেশে থাকত তাহলে আজ বঙ্গবন্ধুর মত আমরা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানার জন্য শোক দিবস পালন করতাম না।
আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিবছর ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়। দিনটি উপলক্ষে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বিভিন্ন শোক বার্তা প্রেরণ করেন।
বঙ্গবন্ধু উপন্যাস শেখ হাসিনা তার পিতার অকাল মৃত্যু উপলক্ষে বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করে থাকেন। তাই শোক দিবস আমাদের কাছে অত্যন্ত ব্যথিত হওয়ার একটি দিন।
জাতীয় শোক দিবস বিভিন্ন সামাজিক এবং রাজনৈতিক সংস্থা যথাযথ মর্যাদা পালন করে থাকে। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের জন্য বিশেষ দোয়া এবং প্রার্থনা করে থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের জন্য বিশেষ দোয়া এবং প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শোক দিবস পালন করা হয়।