ঈদুল আযহা নিয়ে কিছু কথা
ঈদুল আযহা নিয়ে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি। আপনি যদি ঈদুল আযহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এই অনুচ্ছেদ হতে জানতে পারবেন। ঈদ-উল আজাহার মাহাত্ম্য এবং তাৎপর্য এই অনুচ্ছেদে তুলে ধরা হবে। তাই ঈদুল আযহা সম্পর্কে কিছু কথা জানার জন্য এই নিবন্ধটিতে আপনাকে স্বাগতম।
ঈদুল-আযহার প্রেক্ষাপট
অনেকের ধারণা মহান আল্লাহতালা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে স্বপ্নে তার প্রিয় বস্তুটিকে আল্লাহর নামে কুরবানী দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এবং হযরত ইব্রাহীম (আঃ) রাদিয়াল্লাহুর সবচেয়ে প্রিয় বস্তু ছিল তার প্রিয় পুত্র। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) তখন তার প্রিয় পুত্রকে কুরবানী দেওয়ার জন্য আরাফাতের ময়দানে নিয়ে যান, কোরবানি দেওয়ার জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়ে যখন কোলবাড়ির সম্পূর্ণ করেন তখন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) লক্ষ্য করেন তার পুত্রের জায়গায় অন্য একটি পশু কুরবানী হয়ে গেছে। তখন থেকেই কোরবানি প্রচলন পৃথিবীর মানুষের উপর চালু হয়। কিন্তু এখানে কুরবানীর প্রচলন চালু হয়েছে বলে সঠিক বলা যায় না।
এর আগেও কুরবানীর প্রচলন চালু হয়েছিল এবং কুরবানী দেওয়ার কথা হাদিস কুরআনে পাওয়া যায় যেমন:
‘ওদেরকে আদমের দুই পুত্রের (হাবীল ও ক্বাবীল) ঘটনা ঠিকঠিকভাবে শোনাও; যখন তারা (আল্লাহর উদ্দেশ্যে) একটি করে কোরবানি করেছিল। তাদের একজনের কোরবানি কবুল হল, অন্যজনের হল না। তখন দ্বিতীয়জন (প্রথমজনকে) বলল, ‘আমি তোমাকে খুন করে ফেলব।’ প্রথমজন বলল, ‘আল্লাহ তো কেবল মুত্তাকীদের কোরবানি কবুল করেন।’ ( আল মায়িদাহ:২৭)।
একজন সফল হলেন আত্মিক পবিত্রতা উপর ভর করে আর অন্যজন পথহারা হলো লোভ ও প্রতিহিংসার ছায়াতলে। তখন থেকে কোরবানির ধারা শুরু হয়েছিল।
ঈদুল আযহা কেবল পশু কোরবানি করা এবং আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে আনন্দ প্রমোদকে বুঝায় না বরং ঈদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আত্মোৎসর্গ, নিজের ভেতরে থাকা পশুত্বের মূলতপাটন এবং একমাত্র রবের সন্তুষ্টি।
ঈদের কোরবানির পশুর মাংস ভাগ বাটোয়ার
যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী গরু, ছাগল, খাসী, ভেড়া, মহিষ, উট ইত্যাদি আল্লাহর নামে কুরবানি করা উত্তম। আমাদের দেশে মহিষ, গরু, খাসী, ছাগল ইত্যাদি বেশি কুরবানি করে হয়ে থাকে। খাসি বা ছাগলের বয়স ১ বছর ও গরুর বয়স ২ বছর হতে হবে।
কুরবানির মাংস গরীবদের, প্রতিবেশিদের, ও আত্মীয়-স্বজনদের ভাগ করে দেয়া হয়। কুরবানি করার পর মাংস তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের, এক ভাগ আতামীয়স্বজন ও একভাগ গরীব মিসকিন অথবা সমাজে দেয়া হয় অথবা কুরবানি করার পর ইসমামের নিয়মনুযায়ী মাংস ভাগ করা হয়। কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রির টাকা দান করার নির্দেশ রয়েছে।
কোরবানির শিক্ষা
কুরবানী ঈদে পশু কুরবানী দিয়ে আনন্দ উদযাপন করাটাকে বুঝেনা। কথায় আছে “বনের পশুকে নয়, মনের পশুকে কুরবানী দিতে হবে”অর্থাৎ কুরবানী মানুষের মনে যে কোন কুবৃত্তি গুলো আছে যে পশুত্ব আছে সেগুলোকে কোরবানি দিতে হবে। মনের ভেতর থেকে সকল পশু থেকে ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে।
সুন্দর সমাজ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে সকলকে এগিয়ে যেতে হবে। আজ এই কুরবানী ঈদে সকলকে ঈদুল আযহার অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানিয়ে এই নিবন্ধটি এখানে শেষ করছি।