বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা ২০২৩
আজকের এই নিবন্ধে আমি বর্তমান সময়ের কিছু লাভজনক ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। প্রতিযোগিতার এই যুগে এমন কিছু ব্যবসা আমি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো বা ব্যবসা করার পরামর্শ দিব সেগুলোতে তুলনামূলকভাবে প্রতিযোগী কম। এবং সফলতার হার অনেক বেশি। বর্তমান আমাদের দেশে বেকারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় কারো মাথা থেকে কোন ইউনিক চিন্তা ধারা আসলেই সেটাকে কপি করে অনেকেই নিজের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করছেন। সে ক্ষেত্রে যারা কষ্ট করে নতুন ব্যবসার চিন্তা ভাবনা আইডিয়া তৈরি করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই আজকের এই নিবন্ধে আমরা এমন কিছু ব্যবসার কথা আলোচনা করবো সেগুলো করলে আপনার প্রতিযোগিরা আপনার কিছুই করতে। এবং এই ব্যবসা গুলো লাভজনক বটে।
বর্তমান এই সময়ে করোনাভাইরাস এর পরিপ্রেক্ষিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু লাভজনক ব্যবসা আমি নিচে তুলে দিয়েছি। আপনি জানেন বর্তমান সময়ের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা কোনটি। আপনি যদি শহরে বসবাস করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য বলে রাখছি। সেটি হল রেস্টুরেন্ট বিজনেস অথবা ফুড ডেলিভারি বিজনেস। আমি এ সম্পর্কিত একটি লিস্ট তুলে ধরছি যেগুলো করোনাভাইরাস পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সামনে এসেছে। এবং বর্তমান সময়ের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা এগুলো।
- Restaurant business
- Food delivery business
- Fast food stall business
- Import export
বর্তমান সময়ের লাভজনক ব্যবসা গুলোকে আমি দুই ভাগে যদি ভাব করি তাহলে হয়, ডিজিটালাইজেশনের এই যুগে অবশ্যই অনলাইন ব্যবসা কে প্রাধান্য দিতে হবে, অপরদিকে গতানুগতিক কিছু ব্যবসা তো আছেই। নিচে আমি গতানুগতিক কিছু ব্যবসা এবং জনপ্রিয়তার শীর্ষে অধিক লাভবান এর কিছু ব্যবসা উল্লেখ করব।
কোচিং ব্যবসা
কোচিং ব্যবসা একটি খুবই লাভজনক ব্যবসা। এই ব্যবসার তুলনামূলকভাবে পুজি লাগে কম। আপনি যদি একটি কোচিং সেন্টারের প্রধান হন তাহলে পুরো কোচিং সেন্টারটি আপনার দায়িত্বে থাকবে। সে ক্ষেত্রে আপনি পুরো কোচিং সেন্টারের মালিকানা পেয়ে যাবেন। আপনি কিছু পরিমাণ ভালো শিক্ষক নিয়োগ দেবেন যাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন থাকবে। এবং মাস শেষে যত টাকা ইনকাম হবে তার কিছু পরিমাণ টাকা টিচারদের বেতন পরিশোধ করবেন। বাকি সব টাকায় আপনার লভ্যাংশ হিসেবে থাকবে। এটি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা আমি মনে করি। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিপেক্ষিতে কোচিং ব্যবসা লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে। এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
এছাড়াও আপনি এ ব্যবসা গুলো মাথা রাখতে পারেন
ক্ষুদ্র কুটির শিল্প ব্যবসা
ক্ষুদ্র কুটির শিল্প বলতে আপনাকে কোন একটা বিষয় ট্রেনিং নিতে হবে। যেমন আপনি কোন পোশাকের উপর হাতের তৈরি নকশা করার ট্রেনিং নিয়েছেন। এখন আপনি ভাল মানের প্লেন শাড়ি কিনে সেখানে খুব সুন্দর করে নকশা তৈরি করলেন হাতের তৈরি। ধরুন আপনার সারিকে কিনতে ব্যয় হয়েছে 6 হাজার টাকা এখন ওই শাড়িতে ডিজাইন করে দাম পাবেন কমপক্ষে 30000 টাকা। তাই এটি একটি মহৎ ব্যবসা।
ওষুধের ফার্মেসি
ওষুধের ফার্মেসি একটি লাভজনক ব্যবসা। প্রতিদিনের চাহিদার ভিত্তিতে মানুষকে অবশ্যই ওষুধ কেনা দরকার হয়। মানুষ ওষুধ কেনার জন্য বাজারে গিয়ে থাকে। তাই বলা যায় ওষুধের ফার্মেসি একটি লাভজনক ব্যবসা।
আপনি যদি কোন বাজারে বা শহরে বন্দরে দোকান দিতে চান তাহলে আপনাকে কসমেটিকের দোকান এর কথা মাথায় রাখতে হবে। কারণ বর্তমান সময়ে মেয়ে ছেলেরা সাজুগুজু তে ব্যাপক টাকা ব্যয় করে থাকে। অর্থাৎ কসমেটিকের দোকান এর উপর কোটি কোটি টাকার বিজনেস হয়। তাই কসমেটিকের দোকান একটি লাভজনক ব্যবসা। এবং প্রতিটি পণ্যের উপর 30 থেকে 40 পার্সেন্ট পর্যন্ত মুনাফা লাভ করা সম্ভব।
কাপড়ের দোকান
কাপড়ের দোকান বলতে ফ্যাশন হাউস কি বুঝিয়েছি। বর্তমান সময়ে আপনার যদি কোন শহরে বন্দরে দোকান দিয়ে বসার ইচ্ছা থাকে তাহলে কাপড়ের দোকান কে আপনার পছন্দের তালিকার প্রথম দিকে রাখা প্রয়োজন। কারণ এ ব্যবসায় শতকরা 25 থেকে 35 শতাংশ পর্যন্ত লাভ হয়ে থাকে। কার্যক্ষেত্রে সেটা 70 থেকে 80 শতাংশ চলে যায়। তাই কাপড়ের দোকানে ব্যাপক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এ ব্যবসাটি মূলত ঈদ এবং পূজা কেন্দ্র করে করতে হয়।
গ্রামের কিছু ব্যবসার চেনো না
নিচে আমি গ্রামের কিছু ব্যবসার ধারনা দিচ্ছি এই ব্যবসা গুলো গ্রামের মানুষের জন্য প্রযোজ্য। অথবা আপনি বলতে পারেন কৃষিভিত্তিক কিছু ব্যবসা। কৃষিভিত্তিক ব্যবসাগুলো শহর-বন্দর সব জায়গায় করা সম্ভব। বর্তমান সময়ে এ ব্যবসায় কোন শহরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
গরুর খামার
বর্তমান সময়ে অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা গুলোর মধ্যে রয়েছে গরুর খাবার। গরুর খামার কে দুই ভাগে ভাগ করা যায় একটা মাংস উৎপাদনকারী অন্যটি হচ্ছে দুধ উৎপাদনকারী। দুই ব্যবসায় লাভজনক। আপনি একটি গরু খামার শুরু করলে দুই ধরনের করে রাখতে পারবেন। ধরুন আপনার খামারে পাঁচটি গাভী আছে, সেখানে আপনি আরও পাঁচটি ষাঁড় গরু রাখতে পারেন যেগুলো ঈদে বিক্রির জন্য তৈরি করবেন। এখানে মনে রাখতে হবে ষাঁড় গরু এবং গাইগরুকে আলাদা থাকার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
মৎস্য খামার
আরেকটি সফল লাভজনক ব্যবসা হচ্ছে মৎস্য খামার। মৎস্য খামারের ব্যাপক লাভের আশা করা হয়। বাংলাদেশ এ সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যবসা গুলোর মধ্যে মৎস্য খামার অন্যতম। সব মিলে ব্যাপক সংখ্যক লোক বর্তমানে মৎস্য খামারের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এবং লভ্যাংশ দিক দিয়ে খুব ভালো পরিমাণ লাভ করা সম্ভব এই খামারে।
যে সকল মাছের জাত নির্বাচন করবেন –
- পাঙ্গাশ , কই
- পাবদা, গুলশা
- রুই, কাতল
- সর পুঁটি, কার্প ইত্যাদি।
মাছ চাষে যে সকল বিষয় অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে-
- খোলামেলা পরিবেশ ও পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা
- মাঝে মাঝে জাল টেনে মাছের ওজন মাপা
- মাছের ওজন অনুযায়ী খাদ্য ও সরবরাহ করা
- ভালো মানের খাদ্য সরবরাহ করা
- রোগ নিরাময় ওষুধ সরবরাহ করা
- মৎস্য অফিসে যোগাযোগ রাখা
- পর্যাপ্ত বড় হলে বিক্রি করা।
ব্রয়লার ফার্ম
ব্রয়লার চাষ বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় ব্যবসা। ব্রয়লার মুরগির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এটি অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা। আপনার বাড়িতে একটি ঘরে ব্রয়লারের বাচ্চা উঠিয়ে ব্রয়লার পালন করতে পারেন।
ব্রয়লার চাষে প্রশিক্ষণ নিতে পারলে ভালো হয়। অল্প পুঁজি দিয়েই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
তবে এজন্য আপনাকে যে সকল বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে-
- সঠিক জায়গা নির্ধারণ
- উন্নত জাতের ব্রয়লার বাচ্চা
- ভালো মানের খাবার
- সার্বক্ষণিক তদারকি
- পরিষ্কার পরিছন্নতা
- পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা
- রোদ, বৃষ্টি ও শীত থেকে রক্ষা করা
- ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা
- ওজন অনুযায়ী খাদ্য সরবরাহ করা
- স্থানীয় পশুসম্পদ অফিসের সাথে যোগাযোগ রাখা
- পর্যাপ্ত বড় হলে বিক্রির ব্যবস্থা করা।
২০। সবজি চাষ
আমাদের খাদ্য তালিকায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সবজি। দেশব্যাপী সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই আপনি আত্মবিশ্বাসের সাথে সবজি চাষ শুরু করতে পারেন। আপনার বাড়ির যেসকল জমি পতিত পড়ে আছে এসকল জমিগুলো সবজি চাষের আওতায় নিয়ে আসুন। আপনি স্বল্প পুঁজি দিয়ে সবজি চাষ শুরু করতে পারেন।
সবজি চাষের ক্ষেত্রে আপনার যে সকল বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে-
- সঠিক জায়গা নির্ধারণ করুন
- ফসল নির্বাচন করুন
- পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা
- আগাছা পরিষ্কার করা
- সেচ দেওয়া
- জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ
- বালাই নাশক ঔষধ ছিটানো
- কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ রাখা
- ফসল উত্তোলন ও বিক্রি করা।
নিচে আরও কিছু অনলাইন বিজনেস এর কথা আলোচনা
এফিলিয়েট মার্কেটিং
এফিলিয়েট মার্কেটিং এখনো বিশ্বে সর্বোচ্চ লাভজনক ব্যবসা। বাংলাদেশে এখন এটি জনপ্রিয় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে । এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে মাসে সর্বোচ্চ 10 হাজার ডলার আয় করা সম্ভব। এফিলিয়েট মার্কেটিং হল এক ধরনের ব্লগ সাইট । কমিশন অর্জনের জন্য এই সাইটের মাধ্যমে পণ্যের প্রচার দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে এফিলিয়েট মার্কেটিংএ সাধারণত অ্যামাজন, alibaba.com ও অন্যান্য ই-কমার্স সাইটের পন্যের প্রচার করে থাকে। কেউ যদি আপনার এফিলিয়েট লিংক থেকে কোনো পণ্য ক্রয় করে তাহলে, আপনি এই পণ্যের উপর কমিশন পাবেন।
কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার
আপনার কাছে কম্পিউটার শেখার জন্য অনেক ছাত্র-ছাত্রী যোগাযোগ করতে শুরু করেছে। আপনি খুব সহজেই কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ৩ মাস ও ৬ মাস মেয়াদি সার্টিফিকেট প্রদান করতে পারবেন।
আপনার ট্রেনিং এ বিষয় রাখবেন-
- এমএস ওয়ার্ড
- এমএস এক্সেল
- এমএস ফক্সপ্রো
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ওয়েব ডিজাইন ইত্যাদি
- ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং
- ভিডিও এডিটিং
- ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি।
ব্লগিং
আপনি যদি কোন বিষয়ে পারদর্শী হন এবং লিখতে পছন্দ করেন তাহলে ব্লগিং সাইট শুরু করুন। গুগল এডসেন্স, অন্যান্য বিজ্ঞাপন চ্যানেলের মাধ্যমে এটি মনিটাইজ করতে পারেন। এখানে আপনার প্রয়োজন হবে আপনার ওয়েবসাইট ভিজিটর। ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে ভিজিটরের উপর আয় নির্ভর করে।
প্রতি ক্লিকে খরচ(CPC) এবং কিওয়ার্ড রিসার্চ ভলিয়ম এর উপর উপার্জন নির্ভর করে। আপনার প্রিয় বিষয় ব্লগিংএ তুলে ধরুন এবং ব্লগ মনিটাইজ করে উপার্জন করুন।