বিকাশ থেকে টাকা হ্যাক হলে করণীয় কি
বিকাশ থেকে টাকা হ্যাক হলে করণীয় কি এ ব্যাপারে অনেকের স্পষ্ট কোনো ধারণা থাকে না। হ্যাকাররা মূলত নতুন গ্রাহকদের টার্গেট করে যারা ইতিমধ্যে কোন প্রতারণা কিংবা হ্যাকিংয়ের শিকার হননি। সুতরাং এই বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার যে শব্দ টাকা হ্যাক হওয়া ব্যক্তির বিকাশ একাউন্ট হ্যাক সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। যদি ধারণা থাকত তাহলে বিকাশ একাউন্ট হ্যাক কিংবা বিকাশ থেকে টাকা হ্যাক সম্ভব হতো না। বিকাশ গ্রাহকের সতর্কতার জন্য আমরা এই পোস্টটি বিস্তারিত তথ্য সহকারে উপস্থাপন করছি। এটি সমস্ত বিকাশ গ্রাহককে তাদের অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে সহযোগিতা করবে।
বিকাশ একাউন্ট হ্যাক কিংবা বিকাশ থেকে টাকা হ্যাক মূলত একটি প্রতারণামূলক পদ্ধতি যা আপনার দ্বারাই সংঘটিত হয়েছে। কোন ব্যক্তির পক্ষে অর্থাৎ কোন হ্যাকার এর পক্ষে আপনার বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করা কিংবা আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকে টাকা হ্যাক করা সম্ভব নয়। মূলত একজন হ্যাকার আপনার কাছ থেকে আপনার বিকাশ একাউন্টের তথ্য জেনে নিয়ে আপনার অনিচ্ছায় আপনার বিকাশ একাউন্ট কিংবা বিকাশ একাউন্টের টাকা ব্যবহার করে। এই পদ্ধতিকেই মূলত বিকাশ একাউন্ট হ্যাক কিংবা বিকাশ একাউন্টের টাকা হ্যাক বলে।
বিকাশে প্রতারিত হলে করণীয়
আপনার বিকাশ একাউন্টের তথ্য আপনার একান্ত ব্যক্তিগত। এই তথ্য অন্য কারো জানার কথা নয়। আপনার বিকাশ একাউন্টের ব্যক্তিগত তথ্য না জেনে অন্য কেউ আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবে না কিংবা টাকা হ্যাক করতে পারবে না। সুতরাং একটি হ্যাকার কিভাবে আপনার বিকাশ একাউন্টের টাকা হ্যাক করে? হ্যাকাররা বিভিন্ন পাবলিক প্লেস থেকে কিংবা বিকাশে কর্মরত বিভিন্ন প্রতিনিধির কাছ থেকে আপনার অ্যাকাউন্টের লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করে। মনে করুন আপনার একাউন্টে সাম্প্রতিক সময়ে 10 হাজার বা বিশ হাজার টাকা ক্যাশ ইন হয়েছে।
এই তথ্যটি সরাসরি বিকাশ এজেন্টের কাছে কিংবা বিকাশে কর্তব্যরত কর্মকর্তার কাছ থেকে হ্যাকাররা তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। এ অবস্থায় হ্যাকাররা আপনাকে ফোন করবে এবং আপনার অ্যাকাউন্টের এই লেনদেনের তথ্যগুলো শেয়ার করবে। তথ্য শেয়ারের মাধ্যমে আপনার কাছে তারা নিজেকে বিকাশের একজন প্রতিনিধি প্রমাণ করতে চাইবেন এবং পরবর্তীতে আপনার কাছ থেকে ওটিপি এবং পিন জানতে চাইবে। ওটিপি কিংবা পিন জানতে চাওয়ার জন্য তারা আপনার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হবে কিংবা আপনার একাউন্ট এ কোন সমস্যা আছে এ ধরনের তথ্য উপস্থাপন করে আপনার দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গুলো জেনে নিবে। আপনি যদি এসকল তথ্য শেয়ার না করেন তাহলে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্ট কোনভাবেই হ্যাক করা সম্ভব নয় কিংবা আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকে টাকা হ্যাক করা সম্ভব না।
এছাড়াও বিকাশ একাউন্ট কিংবা বিকাশ থেকে টাকা হ্যাক করার আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে লোভ কিংবা প্রলোভন দেখানো। অজ্ঞাত কোন ব্যক্তি বা হ্যাকার আপনাকে ফোন করে লটারি জেতার কিংবা ডাবল টাকা বোনাস পাওয়ার লোভ দেখিয়ে আপনার কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেবে। আপনাকে বলা হতে পারে আপনি লটারি জিতেছেন এই নাম্বারে 1000 টাকা পাঠিয়ে দিলে আজকের মধ্যে আপনি 10000 টাকা পাবেন। এরকম নিত্যনতুন অফার কিংবা প্রলোভন দেখিয়ে বিকাশ একাউন্ট থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। সুতরাং কোনো লোভে পরেই আপনার ব্যক্তিগত তথ্য কখনোই কারো সাথে শেয়ার করবেন না।
বিকাশ একাউন্ট থেকে টাকা হ্যাক হলে করণীয়
আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকে ইতিমধ্যে টাকা হ্যাক হয়ে গেলে আপনার উচিত বিকাশ হেল্পলাইন যোগাযোগ করা। বিকাশ হেল্পলাইন এ যোগাযোগ করে আপনার এই হ্যাক হয়ে যাওয়া টাকার ব্যাপারে জানালে বিকাশ একটি অভিযোগ নিবেন এবং আপনার একাউন্ট থেকে যে একাউন্টে টাকা গেছে সে ব্যাপারে একটি অভিযোগের মাধ্যমে টাকা লক করে রাখার ব্যবস্থা করবেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে হ্যাকাররা অত্যাধিক চালাক হয়ে থাকে এবং লেনদেন করার সাথে সাথে টাকা অন্য নাম্বারে ট্রান্সফার করে দেন। এ কারণে হ্যাক হয়ে যাওয়া টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম।
এক্ষেত্রে পরবর্তীতে যেন এ ধরনের কার্যকলাপ না হয় সে কারণে খুব দ্রুত আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নাম্বার পরিবর্তন করুন। পিন নাম্বার পরিবর্তন করলে আপনার একাউন্টে আপাতত নিরাপদ। পিন নাম্বার সেট করার ক্ষেত্রে কোনভাবেই আপনার মোবাইল নাম্বারের শেষ ডিজিট, জন্ম তারিখ, জন্ম সাল কিংবা অন্য কোন সহজ তথ্য সম্বলিত পিন সেট করবেন না। যতটা সম্ভব জটিল এবং কঠিন পিন নাম্বার ব্যবহার করুন।